প্রতীকী চিত্র
এখনকার জীবনযাত্রায় সুস্থ সবল থাকতে হলে প্রত্যেকের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। গবেষণা বলছে, দিনে মাত্র ১০ মিনিটের ব্যায়ামেই মেলে দীর্ঘজীবন, হতে পারে অনেক সমস্যার সমাধান। তা ছাড়া শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতেও ব্যায়াম অব্যর্থ ওষুধ। কিন্তু কী কী ব্যায়াম করতে পারেন প্রতিদিন, তা জানা আছে কি? না থাকলেও চিন্তা নেই, হদিশ রইল এই প্রতিবেদনে।
ক্রাঞ্চেস
বিছানায় বসেই করতে পারেন এই ব্যায়াম। পেটের বাড়তি মেদ ঝরাতে এবং শারীরিক ভাবে চাঙ্গা থাকতে এই ব্যায়ামটি করতে পারেন। বিছানায় শুয়ে হাঁটুকে ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকিয়ে হাত দু’টি মাথার নীচে রাখুন। মাথা ও ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে কিছু ক্ষণ এই ভঙ্গিতে থাকুন। উপকার পাবেন।
স্ট্রেচিং
সারা রাত ঘুমিয়ে কাটানোর ফলে পেশি স্বাভাবিক ভাবেই নমনীয়তা হারায়। পেশি সচল রাখতে হাত-পা মাঝেমাঝেই প্রসারিত করা জরুরি। ঘুম থেকে উঠে নিজেকে চাঙ্গা রাখতে বিছানায় বসেই এই ব্যায়াম করতে পারেন। দেখবেন, ঝরঝরে লাগবে। আলসেমিও কেটে যাবে।
লাঞ্জেস
লাঞ্জেস খুব ভাল স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ়। থাই ও হ্যামস্ট্রিং, দুই-ই টোনড হবে এতে। একটি পা সামনে এগিয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে। আর একটা পা পিছনে দিয়ে স্ট্রেচ করে বসার মতো করে শরীরটা উপর-নীচ করতে হবে। কাঁধ যেন সোজা থাকে। এটি প্রথমে ১০টি করে প্রতি পায়ে তিন বার যথেষ্ট।
স্টেপ-আপ্স
হাঁটুতে কোনও বড় ধরনের অসুখ না থাকলে অর্থাৎ সিঁড়ি ভাঙা একেবারে বারণ না হলে সিঁড়ি ভাঙার অভ্যাস কিন্তু বজায় রাখতে হবে। হাতে দু’লিটারের জলভর্তি বোতল নিয়ে সিঁড়ির ধাপের সামনে প্রথমে বাঁ পা তুলে উঠুন। তার পর ওই পা নামিয়ে ডান পা তুলুন ও নামান। দু’পা মিলিয়ে মোট ২৪ বার ওঠানামা করতে হবে।
ব্রিজ
প্রথমে মাটিতে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাঁটু ভাঁজ করে পা দুটো নিতম্বের কাছে রাখুন। এ বার ধীরে ধীরে মাটি থেকে কোমর তুলে ধরুন। এ বার দুই হাত টান টান করে, গোড়ালি স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। এই অবস্থানে ১০ সেকেন্ড থাকুন। ৪ থেকে ৫ বার এই ভাবে অভ্যাস করুন।
জাম্পিং জ্যাক
জাম্পিং জ্যাক কোনও সরঞ্জাম ছাড়াই যে কোনও জায়গায় করা যেতে পারে। এটি কার্ডিওভাসকুলার সহনশীলতা উন্নত করতে, পেশী শক্তিশালী করতে এবং ক্যালোরি বার্ন করতে সহায়তা করে। এই অনুশীলনটি এক মিনিটের জন্য, তারপর ১৫ সেকেন্ডের জন্য বিশ্রাম নিয়ে আবার দু’টি, মোট তিনটি সেটে করতে পারেন। পা দুটি ফাঁক করে মাথার উপর হাত তোলা, নামানো এর পদ্ধতি।
স্কোয়াট
শরীরের নিম্নাংশের জন্য স্কোয়াট হল একটি চমৎকার ব্যায়াম, যা অল্প সময়ের মধ্যে সঞ্চালিত হতে পারে। এই ব্যায়াম করার জন্য প্রথমে দু’পা ফাঁক করে দাঁড়ান। এ বার দুই হাত টানটান করে সামনে রেখে, হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধেকটা বসতে চেষ্টা করুন। এটি আপনার পা, নিতম্ব শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এটিও এক মিনিটের জন্য করে, ১৫ সেকেন্ডের জন্য বিশ্রাম নিয়ে আরও দু’টি সেট করতে পারেন।
পুশ আপ
পুশ-আপ মূলত বুক, কাঁধ, ট্রাইসেপস এবং মূল পেশীগুলির জন্য করা হয়। শরীরের উপরিভাগে শক্তি বাড়াতে এবং অঙ্গবিন্যাস উন্নত করতে এই ব্যায়াম বেশ উপকারী। হাতের আর পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে শরীরটাকে এক বার তুলুন আর আর এক বার নামান। ২০টি করে তিনটি সেট করতে পারেন।
প্ল্যাঙ্ক
প্ল্যাঙ্ক ‘অ্যাবস’ বা পেশীর ভাঁজ তৈরি করতে, পিঠ ও কাঁধ শক্ত করতে এবং শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে খুব কার্যকরী। এটি অঙ্গবিন্যাস, ভারসাম্য এবং স্থিতিশীলতা উন্নত করতেও সাহায্য করে। প্ল্যাঙ্ক করার সময়ে প্রথমে বেশি সময় না পারলেও, ধীরে ধীরে তার সময় বাড়ানোর চেষ্টা করুন। কনুই আর দু’পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে শরীরটাকে শূন্যে এক সরলরেখায় রাখার নাম প্ল্যাঙ্ক। এ ক্ষেত্রে মাটির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে থাকবে শরীর।
বারপিস
বারপিস অল্প সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে ‘ক্যালোরি বার্ন’ করতে সাহায্যকারী। এই ব্যায়াম বুক, হাত, পা এবং মূল পেশী-সহ একাধিক পেশীকে শক্ত করে তোলে। বারপিস আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও বেশ কার্যকরী।