Bangladesh News

পদ্মা সেতু কাণ্ডে ক্ষতিপূরণ দিক বিশ্বব্যাঙ্ক, জোরালো হচ্ছে দাবি

স্রোতস্বিনী নদীতে শ্যাওলা জমে না। প্রবল গতিতে পাথরও ছিটকোয়। জলের চাপে সব নুড়ি নীচে পড়ে থাকে। সমুদ্র সামনে রেখে নদী এগোয় অবাধে। তেজে উড়ে যায় সব বাধা। পদ্মাকে রুখতে চেয়েছিল ষড়যন্ত্র করে। অভিযুক্ত অন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত বাঙালিও।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৩:২৬
Share:

স্রোতস্বিনী নদীতে শ্যাওলা জমে না। প্রবল গতিতে পাথরও ছিটকোয়। জলের চাপে সব নুড়ি নীচে পড়ে থাকে। সমুদ্র সামনে রেখে নদী এগোয় অবাধে। তেজে উড়ে যায় সব বাধা। পদ্মাকে রুখতে চেয়েছিল ষড়যন্ত্র করে। অভিযুক্ত অন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত বাঙালিও। বাঙালি সম্পর্কে বলা হয়, তারা কাঁকড়ার মতো ঝুড়ি থেকে যে বেরোতে চায়, তাকেই টেনে নামায়। হাসিনাকে নামানোর চেষ্টাও কম হয়নি। ষড়যন্ত্রের ফাঁকে আটকানোর চেষ্টা, যাতে এক পা এগোনও মুশকিল হয়ে যায়। সেই কাঁটা সরিয়ে হসিনা আগুয়ান। জয়ের ছন্দে প্রগতি অম্লান। বাংলাদেশকে উলটো পথে চালিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব কাজেই তাঁর একটাই স্লোগান 'জয় বাংলা'। তাঁর বিজয় অভিযানে 'বেঙ্গল ক্র্যাব' প্রবচনটা মিথ্যে।

Advertisement

পদ্মা সেতু নির্মাণে ভীষণ ভাবে গুরুত্ব দিয়েছিলেন হাসিনা। তিনি জানতেন, সেতুটা হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাটাই বদলাবে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছোঁয়া যাবে হাওয়ার বেগে, পদ্মা আর পথ রুখবে না। তার বুকের ওপর দিয়ে যাতায়াত। সড়ক-রেল যোগাযোগ একই সঙ্গে। পরিকল্পনা দেখে পুলকিত বিশ্বব্যাঙ্ক। এমন একটা ঐতিহাসিক কাজে তাদেরও আগ্রহ। আর্থিক সাহায্যের হাত উন্মুক্ত। স্বপ্নের সেতু নির্মাণ শুরু। আচমকা ছেদ। বিশ্বব্যাঙ্কের ঘোষণা, তারা সাহায্য করতে অপরাগ। তাদের কথায় বাংলাদেশ সরকার আকাশ থেকে আছড়ে মাটিতে। কী হবে এখন। এত বড় প্রোজেক্ট আটকে যাবে। পদ্মা সেতু আর তৈরি হবে না। জাতীয় জীবনে এমন বিপর্যয় সামলানো যায় কী করে। সহযোগিতার হাত হঠাৎ গুটিয়ে নেওয়ার কারণটা কী। কোনও জবাব নেই, বিশ্বব্যাঙ্কে যেন মানুষ নেই, সব পাথর। কায়ক্লেশে মুখ খুলল অবশেষে। বলল, দুর্নীতি। কাজের নামে দুর্নীতির রাজত্ব।

আরও পড়ুন: ঢাকায় জয়শঙ্কর, এপ্রিলে আসছেন হাসিনা

Advertisement

এমন অভিযোগে বাংলাদেশ সরকার বিব্রত। তারা অবাক, বিশ্বব্যাঙ্ক কী করে এ সব কথা তুলছে। এ তো ঘরের খবর বাইরে থেকে পাওয়া। প্রমাণ দাখিল করতে বলা হল। বিশ্বব্যাঙ্ক ছেঁড়া ছেঁড়া কিছু অভিযোগ ভাসিয়ে দিল। যাতে কিছুই প্রমাণ হয় না। তবে শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতু থেমে রইল না। হাসিনা দমবার পাত্রী নন। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, পদ্মা সেতুর কাজ যেমন চলছে, তেমনই চলবে। বিশ্বব্যাঙ্কের সাহায্যের দরকার নেই। বাংলাদেশ নিজের টাকায় এ কাজ করবে। কথাটা বিশ্বাস করেনি বিশ্ব। এত ক্ষমতা আছে নাকি বাংলাদেশের। তারা তো সবেতেই পর মুখাপেক্ষী। সমালোচনায় জল ঢেলে হাসিনা শক্ত হাতে হাল ধরলেন পদ্মা সেতুর। নির্মাণ কাজ চলল দুর্বার গতিতে।

আরও পড়ুন: মুজিব না জামাত, বাংলাদেশের স্বার্থেই এ বার ভাবতে হবে বিএনপি-কে

‌দুর্নীতির বিরুদ্ধে কানাডার আদালত রায় দিল, এ মামলা চলতে পারে না। এর কোনও সারবত্তা নেই। লজ্জার মাথা খেয়ে বাংলাদেশের প্রশংসায় মাতল বিশ্বব্যাঙ্ক। সব উন্নয়নশীল দেশকে বলতে লাগল, উন্নয়ন চাও তো বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নাও। আওয়ামি লিগের ১৪ দলের জোট এবার প্রতিবাদে সরব। তারা দাবি তুলেছে, পদ্মা সেতু বন্ধের ষড়যন্ত্রকারীদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ডেকে স্পিকারের কাছে জবাবদিহি করতে বলা হোক। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাঙ্ককে সরকার জানাক তারা যেন ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে। তাদের হঠকারী সিদ্ধান্তে সেতুর কাজ বিলম্বিত হয়েছে। তার মাশুল বিশ্বব্যাঙ্ককে গুনতেই হবে। বাংলাদেশকে এখন শান্ত করতে পথ খুঁজছে বিশ্বব্যাঙ্ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement