সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনা। নিজস্ব চিত্র।
ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বা উত্তেজনা চান না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসিনার মতে, এই সংঘাতের প্রভাব পড়বে তাঁর দেশের উপরেও। রবিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন নিয়ে ছিল এই সাংবাদিক সম্মেলন। সেখানেই ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি চাই না দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হোক। সংঘাত হলে এর প্রভাব বাংলাদেশের ওপরেও পড়বে। সংঘাত হোক তা আমাদের কাম্য নয়।”
সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশ না নেওয়ার বিষয়েও মুখ খোলেন বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “পাকিস্তান যেহেতু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে মন্তব্য করেছে, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যাব না। দেখা যাচ্ছে অন্য আরও চারটি দেশ একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।... সার্কের বর্তমান সভাপতি রাষ্ট্র নেপাল বাধ্য হয়েছে সম্মেলন বন্ধ করতে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
পাকিস্তান প্রসঙ্গ উঠতেই বেশ চড়া সুরেই জবাব দেন হাসিনা। বলেন, “বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সেই পাকিস্তান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্যও হয়েছে। কিন্তু, আমরা যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করি তখন তারা এ বিচার বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে। এটা নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করে ও বিবৃতি দিয়ে এই বিচারের সমালোচনা করেছে। তাই আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছি।” তিন আরও বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান পরাজিত শক্তি। তাদের পছন্দের লোকেদের বিচার হচ্ছে। তাই তারা তো কাঁদবেই।”
অতীত টেনে এনে হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতার পরই আওয়ামি লিগ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু করে। কিন্তু জিয়াউর রহমান এসে ওই বিচার বন্ধ করে দেন। বন্দিদের ছেড়ে দেন। যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও বানান। এর পর খালেদা জিয়া সরকারে এসে রাজাকার আলবদরদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। যারা রাজাকার আলবদরদের মন্ত্রী বানিয়েছেন তাদের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কিনা ভেবে দেখতে হবে।”
কানাডায় গ্লোবাল ফান্ড সম্মেলন এবং আমেরিকায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ইদ-উল আজহার পর দিন ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী। ১৭ দিনের সফর শেষে গত শুক্রবার বিকেলে দেশে ফেরেন তিনি। এই সফরে ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পান তিনি।