ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আতঙ্কের রূপ নিয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া দফতর। মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। 'মোরা' এখন কক্সবাজার থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সারা দেশের নৌ চলাচল। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেতের আওতায় রয়েছে। সোমবার রাত শেষে মঙ্গলবার ভোর ৪টে থেকে ৬টার মধ্যে ঘূর্ণি ঝড়টি বাংলাদেশে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, 'মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালি, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের আশেপাশের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার পাঁচ ফুট বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ অতিক্রমের সময়ে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলাগুলো এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোয় ভারি বৃষ্টি ও ঘণ্টায় ৮৯-১১৭ কিলোমিটার গতিতে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
আরও পড়ুন: ফলের আশা না-করেই অনন্য ফল
উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাছ ধরার নৌকো ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী ঘোষণার আগে পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। উপকূল এলাকার মানুষ ও গবাদি পশু সরানোর কাজ শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঝোড়ো হাওয়ার প্রভাবে ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এরই মধ্যে কক্সবাজার এলাকার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর এবং আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মানুষজনকে। সোমবার সন্ধ্যায় উপকূলে ৮ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত ঘোষণার পরই তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ দিন বিকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিন জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে দুপরে শুধু উপকূলীয় এলাকায় ভোলা, পটুয়াখালি ও বরিশালে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।