ভারত-বাংলাদেশ জুড়ে একই ছবি

ইদের জমায়েত থেকে সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা করলেন দু’দেশের ইমামরা

কিশোরগঞ্জে ইদের নমাজের জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দায় সরব হলেন ভারত ও বাংলাদেশের ইমামরা। আইএস এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপেরও তীব্র নিন্দা শোনা গেল মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের মুখে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ১৩:৪৯
Share:

মৌলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ।

কিশোরগঞ্জে ইদের নমাজের জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দায় সরব হলেন ভারত ও বাংলাদেশের ইমামরা। আইএস এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপেরও তীব্র নিন্দা শোনা গেল মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের মুখে। দু’দেশেরই বিভিন্ন অঞ্চলে ইদের নমাজের আগে বা পরে নিজেদের বক্তৃতায় ইমাম এবং মুসলিম ধর্মীয় নেতারা এক সুরে বলেছেন, নিরীহ, নিরস্ত্র মানুষের উপর এই জঘন্য হামলাকারীদের তাঁরা মুসলমান বলে মনে করেন না।

Advertisement

ভারতের লখনউতে আইশবাগ ইদগাহে নমাজের পর ইমামরা আইএস-এর বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। আইএস জঙ্গিদের ইসলাম বিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করার জন্য ইদের জমায়েতকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আইশবাগ ইদগাহের প্রধান ইমাম মৌলনা খালিদ রশিদ ফারাঙ্গি মাহলি বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, আইএস ইসলামের বিরোধী, আইএস মানবতার বিরোধী। আমরা বলেছি, আইএস সমর্থকরা কোনও ভাবেই মুসলিম হতে পারে না, আইএস সম্পূর্ণ অ-ইসলামিক।’’

গোটা বাংলাদেশ জুড়েও বৃহস্পতিবার একই ছবি দেখা গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইদের জমায়েতে জঙ্গি, সন্ত্রাবাদীদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন ইমাম, মৌলানারা। বাংলাদেশের বৃহত্তম ইদগাহ হল কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ইদগাহ। সেখানেই এ দিন সকালে জঙ্গি হামলা হয়েছে। শোলাকিয়া ইদগাহের খতিব মৌলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, যারা এই রকম হামলা করতে পারে, তারা আর যাই হোক মুসলমান নয়।

Advertisement

ফরিদউদ্দিন মাসুদ এ দিন বলেছেন, ইসলাম এই হামলা সমর্থন করে না। এ হামলার ঘটনায় বোঝা গেলো যারা হামলা করে তারা মুসলমান নয়। তিনি আরও বলেন, ‘‘শোলাকিয়ার ইদগাহে ইদের নামাজের প্রাক্কালে বোমা হামলার ঘটনায় জাতির ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আরও দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। কারণ যারা মদিনা শরিফে আক্রমণ করে, ইদগাহে হামলা করে, ইসলামের নামে তারা আসলে ইসলামের শত্রু। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে হামলা করা ইসলামের পথ নয়।’’
এ দিনের হামলার পর ফরিদউদ্দিন ইদের নমাজে আর ইমামতি করেননি। অন্য এক জন ইমাম নমাজের ইমামতি করেন। এ প্রসঙ্গে ফরিদউদ্দিল মাসুদ বলেন, ‘‘সার্কিট হাউজে ছিলাম, তখনও নমাজের সময় হয়নি। যে মুহূর্তে হেলিকপ্টার থেকে ইদগাহে নামলাম, তখনই হামলা হল। আমাকেই হয়ো টার্গেট করেছিল।’’ মৌলানা মাসুদ আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদীরা যত বারই চালাক না কেন, তাদের সামনে আমাদের হেরে যাওয়া চলবে না। যে সমস্ত তরুণ বেহেশতের পথ মনে করে সন্ত্রাসের পথ গ্রহন করেছে তাদেরকে আমি উদার আহ্বান জানাবো, হে তরুণ হামলা করে জন্নত পাওয়া যায় না। এটা জাহান্নামের পথ। তোমরা তাড়াতাড়ি এ কথা উপলব্ধি করে শান্তির দিকে ফিরে এসো।’’

আরও পড়ুন: ইদে নমাজ না পড়ে যারা খুন করে, তারা মুসলিম নয়, ঘৃণিত: হাসিনা

এ ছাড়াও বাংলাদেশের বায়তুল মোকাররম, জাতীয় ইদগাহ এবং অন্যান্য মসজিদ ও ইদগাহগুলিতে বৃহস্পতিবার ঈদ জামাতের আগে দেওয়া বক্তৃতায় মুসলিম ধর্মীয় নেতেরা সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করেন। ইমামরা বলেছেন, ইসলামের নামে, আল্লাহর নামে ও জিহাদের নামে কোনও নিরীহ মানুষ হত্যা করা কখনও ইসলাম সমর্থন করে না। যুদ্ধেও প্রতিপক্ষের ওপর আগে আঘাত করা ইসলাম সমর্থন করে না। এক ইমাম বলেন, ‘‘আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমিতে জিহাদ ও ইসলামের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। যারা এসব করছে, তারা কখনও মুসলমান হতে পারে না।’’

সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement