ঢাকার বনানীর বহুতলে আগুন নেভানোর চেষ্টায় দমকল কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র
ঢাকায় একটি বহুতলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হল অন্তত ১৯ জনের। মৃতদের মধ্যে এক জন শ্রীলঙ্কার নাগরিকও রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। আহত হয়ে আরও বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে অনেকে পাইপ বেয়ে নীচে নেমে আসার চেষ্টা করেন। বেশ কয়েকজন ঝাঁপ দেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ। বনানী এলাকার এফ আর টাওয়ার নামে ওই বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ আগুন লাগে। খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের ২১টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী নামানো হয়। বিকেলের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে এই বিপত্তি।
ঢাকার অভিজাত বনানী এলাকার কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ৩২ নম্বর হোল্ডিংয়ের এই ২২ তলা ভবনটিতে মূলত বাণিজ্যিক কাজকর্ম হয়। রয়েছে প্রচুর দোকানপাট ও ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র। এই ভবনেই বৃহস্পতিবার দুপুরে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঢাকার বিভিন্ন দমকল কেন্দ্র থেকে পর পর ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। প্রথমে পাঁচ তলা থেকে আগুন লাগলেও ধীরে ধীরে তা উপরের তলাগুলিতেও ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
ভিতরে তখনও আটকে বহু মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জানালা দিয়ে বহু মানুষ সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করতে থাকেন। অনেকে পিছনের দিকের পাইপ বেয়ে নীচে নেমে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু নামার সময় কয়েক জনকে হাত-পা পিছলে নীচে পড়ে যেতে দেখা গিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এছাড়া অনেকে প্রাণে বাঁচতে নীচে ঝাঁপ দেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপুঞ্জের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে, সাবধানে চলুন,আমেরিকার ‘মাসুদ আজহার’ প্রস্তাবে ফুঁসে উঠল চিন
আরও পড়ুন: দেশের কোথাও জঙ্গি ঘাঁটি নেই! ভারতের ডসিয়েরের জবাব দিল পাকিস্তান
আগুনের ভয়াবহতা অনুমান করে এবং দমকল নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় সেনাবাহিনীকে তলব করে শেখ হাসিনা সরকার। সেনার তিন বাহিনীর জওয়ানরাই আগুন নেভানো এবং উদ্ধারের কাজ করেন। বায়ুসেনার দু’টি হেলিকপ্টারও আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। শেষ পর্যন্ত বিকেল ৪টে নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর জানালার কাচ ভেঙে ভিতরে ঢুকে একের পর এক আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে শুরু করেন দমকল কর্মীরা। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিকেল ৫টা নাগাদ বনানী থানার ওসি ফরমান আলি সাংবাদিকদের জানান, অগ্নিকাণ্ডে অন্তত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে এক জন শ্রীলঙ্কার নাগরিক। এ ছাড়া অগ্নিদগ্ধ হয়ে এবং উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে বা পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। যদিও পরে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়ে ১৯ জন হয়েছে।