বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদীয় গণতন্ত্রের মোড়কে একটি স্বৈরাচারী, একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম দিয়েছেন। এই ভাবেই বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া। চলতি ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে সংবিধানের সংশোধন ও প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার কথাও বলেছেন বিএনপি’র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। আর সেই লক্ষ্যেই তিনি বুধবার ঘোষণা করেছেন ‘ভিশন-২০৩০’। ঢাকার একটি হোটেলে দু’ঘন্টার লিখিত ভাষণে খালেদা জিয়া ২০৩০ সালকে সামনে রেখে তাঁর দলের ৩৭ টি পরিকল্পনার কথা জানান।
খালেদার ওই তোপ দাগার পরেই শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি’র বিরুদ্ধে আওয়ামি লিগের ভাবনা চুরির অভিযোগ তোলেন। বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি’র ‘ভিশন ২০৩০’-র প্রতিক্রিয়ায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন।
বেগম খালেদার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাংলাদেশে যে একটি স্বৈরতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্রের জন্ম দিয়েছে, সেটা নিয়েও নতুন করে ভেবে দেখা হবে। সংবিধানের এককেন্দ্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ণ রেখে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল এবং ওই ধরনের আরও কিছু সংযোজন, প্রতিস্থাপন করা হবে। বিএনপি অগণতান্ত্রিক বিষয়গুলোর সাংবিধানিক সংশোধন করবে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। যে কোনও জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ বাতিল করা হবে, গ্রাম আদালত চালু হবে। বিএনপি অন্য রাষ্ট্রের কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করবে না। আর বাংলাদেশের ব্যাপারেও কারও হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না। বাংলাদেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় ৫০০০ ডলারে উন্নীত করা হবে।’’
আরও পড়ুন- শেয়ার বাজারের জোয়ারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ছে
পরে ডাকা সাংবাদিক সম্মেলনে খালেদার বক্তব্যকে খারিজ করে দিয়ে আওয়ামি লিগ নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘পরের মেধাস্বত্ব চুরি করা নৈতিক অপরাধ, এটা এক ধরনের রাজনৈতিক অসাধুতা। একটি রাজনৈতিক দল কতটা দেউলিয়া হলে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের ভাবনা-চিন্তা নির্লজ্জ ভাবে চুরি করতে পারে? ‘বিএনপি আসলে ইমিটেট (অনুকরণ) করতে পারে, ইনোভেট (উদ্ভাবন) করতে পারে না। বেগম খালেদার ‘ভিশন-২০৩০’ আসলে একটি মেধাহীন, অন্তঃসারশূণ্য, দ্বিচারিতাপূর্ণ ও জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়।’’