শরিকরা সরে থাকবে কেন। তারাও কাছে আসবে। কাজের মূল স্রোতে ভাসবে। মতামত জানাবে। ভালমন্দ বিচার করবে। এমনকী নেতা নির্বাচনেও তাদের পরামর্শ গুরুত্ব পাবে। আওয়ামি লিগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার এমন উদ্যোগে চমকেছেন তাঁর দলের শীর্ষ নেতারাও। আওয়ামি লিগ সরকারে শরিকরা আছে। মন্ত্রীও হয়েছেন। তবে থাকেন একটু দূর দূরে। দলের কাজে নাক গলাক, আওয়ামি লিগ নেতারা চান না। সে দিন শেষ। এ বার শরিক নেতারা দূর থেকে কাছে। দলের একাংশের এ নিয়ে আপত্তি থাকলেও কিছু করার নেই। গোপনীয়তা রাখার দোহাই দিয়ে শরিকদের পাশ কাটিয়ে যাওয়া চলবে না।
শরিক নিয়ে ঝঞ্ঝাট কম হয়নি পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারে। সিপিএমের দাদাগিরির অভিযোগ তুলত শরিকরা। আলোচনায় বিবাদ মেটানোর চেষ্টা হলেও সবটা মিটত না। শরিকদের সঙ্গে মিলে মিশে চলাটাই হাসিনার ইচ্ছে। কোনও শরিক যেন মনে না করে, তাদের যথার্থ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না।
হাসিনার সিদ্ধান্তের বিরোধীরা মনে করেন, শরিকদের ভোট তো মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ। তাদের আবার অত খাতির কীসের। তাঁরা জানেন না, এই সামান্য ভোটও জয়-পরাজয়ে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে। আওয়ামি লিগ একক গরিষ্ঠতা পেলেও শরিক ভোট না পেলে এই জায়গায় পৌঁছত না।
আরও পড়ুন: হাসিনার প্রত্যুত্তর: বিএনপি জমানায় চিন-বাংলাদেশ গোপন প্রতিরক্ষা চুক্তি ফাঁস
শরিকরা আশ্বস্ত। তারা আওয়ামি লিগের সঙ্গে জোট বেঁধেই আছে। ভাবনা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহম্মদ এরশাদকে নিয়েই। তিনি কী করবেন আগে থাকতে বলা শক্ত। দলের ওজন বাড়াতে রাস্তা বদলানোটা তাঁর অভ্যাস। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদে নতুন নেতা নির্বাচনে মনোযোগী আওয়ামি লিগ। নেতা বাছাইয়ে শরিকদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র আওয়ামি লিগের শীর্ষ নেতাদের কথায় কিছু হবে না। অতীতে দেখা গেছে, অযোগ্য জেনেও নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সেটা আর চলবে না।
আওয়ামি লিগে যাঁরা ঘর ছেড়েছিলেন তাঁরাও ধীরে ধীরে ফিরছেন। আগের নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দলের স্বীকৃত প্রার্থীকে হারিয়ে তাঁরা অনেকে সাংসদ হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রার্থী নির্বাচনে ভুল ছিল। শীর্ষ নেতৃত্ব ধামাধরাদের প্রার্থী করেছিলেন। জিতে প্রমাণ করেছি, আমরাই ঠিক। এ বার তাঁদের আর নির্দল হয়ে লড়তে হবে না। দলীয় প্রার্থী হয়েই নির্বাচনে দাঁড়াবেন।
১৬ নির্দল সাংসদের মধ্যে ১৪ জন ফিরেছেন। আর বিক্ষুব্ধ নন কেউ। আওয়ামি লিগের সক্রিয় সদস্য। দু'জন এখনও দূরে। তাঁরা হলেন, মেহেরপুর-২ আসনের মোহম্মদ মকবুল হোসেন আর ফেনী-৩ আসনের রহিম উল্লাহ। মকবুল এর আগে আওয়ামি লিগের টিকিটেই লড়েছেন। রহিম ছিলেন সৌদি আরবের জোদ্দায় আওয়ামি লিগের সভাপতি। তাঁদেরও প্রত্যাবর্তন আসন্ন।