বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে।
হোলি আর্টিজান আর শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় মদত দিয়ে তেমন লাভ হল না বলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র- বিরোধী আন্দোলনকে উসকে দিয়ে বিরোধী দলনেত্রী খালেদা জিয়া তাঁর সরকারকে
বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছেন বলে মন্তব্য করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, ‘‘একটি নন-ইস্যুকে ইস্যু করে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে চান, তা হলে তা কড়া হাতে দমন করতে আমরা পিছপা হব না।’’ ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতা করে কয়েকটি বামপন্থী দল এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাংবাদিক সম্মেলনের প্রেক্ষিতে শনিবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে সাংবাদিকদের ডেকেছিলেন প্রধনমন্ত্রী। সেখানে ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা’ হিসেবে তাঁর ওপর বাংলাদেশের নাগরিকদের আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বিরোধীদের সতর্ক করেন তিনি।
হাসিনা বলেন, ‘‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের যাঁরা বিরোধী, তাঁরা ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও মনগড়া কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, চিন, জাপান সহ উন্নত দেশগুলি তাদের মোট বিদ্যুতের ৪০ থেকে ৯৮ শতাংশ উৎপাদন করে কয়লা দিয়ে। আর এখানে (বাংলাদেশে) সেটা হচ্ছে মাত্র এক শতাংশের কিছু বেশি। স্বল্পমেয়াদী প্রকল্পের আওতায় আমরা ‘কুইক রেন্টাল’ করি। সেই সময় ‘কুইক রেন্টালে’র অনেক সমালোচনা হয়েছে। আমার প্রশ্ন- ‘কুইক রেন্টাল’ যদি না করতাম, তা হলে বিদ্যুৎ সমস্যা মিটতো কি? আমি জানি, ‘কুইক রেন্টাল’ স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। দীর্ঘমেয়াদী বিদ্যুৎকেন্দ্র বানাতে হবে। তাই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই আগে আমাদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও বানাচ্ছি। যা থেকে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য যা কিছু ভালো মনে হবে, আমি সেগুলো করবই। আপনারা আমার উপর বিশ্বাস রাখুন। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আমি এমন কোনো কাজ আগেও করিনি, ভবিষ্যতেও করব না, যা দেশের এবং দেশের মানুষের সামান্যতম ক্ষতি করে।’’
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি-ইন্টারনেট।
হাসিনা এও জানান, ‘‘গভীর বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, জানি। আমাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হচ্ছে সুন্দরবনের প্রান্ত সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে আর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’গুলির থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে। ওই এলাকার বায়ুপ্রবাহ সুন্দরবনের বিপরীত দিকে। সামান্য পরিমাণ ক্ষতিকারক বায়বীয় পদার্থও যদি নিঃসরণ হয়, তবে তা সুন্দরবনের দিকে নয়, উল্টো দিকে প্রবাহিত হবে।’’
আরও পড়ুন- পাঁচ বছর আগে বাবাকে চিঠি লিখে ঘরছাড়া তামিম