খালেদা জিয়া।
বিরোধী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে আসলে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সম্প্রতি খালেদা মন্তব্য করেছেন, তাঁদের বাদ দিয়ে আর নির্বাচন আর করা যাবে না। সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ইনুর ব্যাখ্যা— ‘‘এই মন্তব্যেই প্রমাণ, নির্বাচন বানচাল করে গণতন্ত্রের পথ থেকে দেশকে ফের সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত খালেদা জিয়া এবং তাঁর সঙ্গী জামাত ও পাকিস্তানিরা।’’
বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি কলকাতায় এসে ঘোষণা করে গিয়েছেন, ডিসেম্বর তাঁদের বিজয়ের মাস। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই তাঁরা নির্বাচন করতে চান। তাঁদের জোটশরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি ইনুর কথায়, নানা কারণে এই নির্বাচন জাতির মরণ-বাঁচনের নির্বাচন। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার বাধ্যবাধকতা তো রয়েছেই। একই সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাও। ইনুর কথায়, ‘দেশকে যুদ্ধাপরাধী, মৌলবাদী ও জঙ্গিদের ধারকদের হাতে’ তুলে না-দেওয়ার প্রতিজ্ঞাও সেই বাধ্যবাধকতা।
খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছেন, কোনও ‘সহায়ক সরকারের’ নেতৃত্বে নির্বাচন না-হলে তাঁরা অংশগ্রহণ করবেন না। ইনু বলেন, ‘‘যত ক্ষণ না খালেদা এই ভূতের সরকারের দাবি ছাড়ছেন, বলতে হবে গণতন্ত্রে তাঁর বিন্দুমাত্র আন্তরিকতা নেই।’’ ইনুর কথায়, ২০১৪-য় সরকার বিএনপি-কে নির্বাচনে আনতে সম্ভাব্য সব রকম চেষ্টা করেছিল। এমনকী সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবও দেন হাসিনা। তবু খালেদা আসেননি। তাই এ বার কোনও আলোচনা হবে না।
জাসদ নেতা বলেন, ‘‘বাংলাদেশে রাজাকারদের শাস্তি দেওয়ার কাজ বাকি ছিল। শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে দেশে যে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তা উৎখাতের কাজ বাকি ছিল।’’ ইনুর কথায়, শেখ হাসিনা সরকার ষুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে শাস্তি দিয়েছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে লড়াই করছে। জোট বেঁধে এই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা এখন কাজ।
ইনুর দাবি, খালেদা জিয়ার আমলে দেশকে জঙ্গিবাদের আখড়া করে তোলা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে তলানিতে পাঠানো হয়েছিল। হাসিনা সরকার জঙ্গিবাদকে উচ্ছেদের পাশাপাশি বাংলাদেশকে উন্নয়নের সড়কে নিয়ে গিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জও এই উন্নয়নকে মডেল হিসাবে ঘোষণা করেছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কও এখন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সীমান্ত-সমস্যা নিরসন হয়েছে। দু’দেশ যৌথ ভাবে উপমহাদেশের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ইনুর কথায়, জামাত আর পাকিস্তানের হাত ধরে বাংলাদেশকে সেই পথ থেকে সরাতে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন খালেদা।
আগামী নির্বাচনে জিতে আসতে তাই ভারতের মানুষের শুভেচ্ছাও চাইছেন পড়শি দেশের তথ্যমন্ত্রী।