পড়ুয়াদের চাপে কড়া হচ্ছে আইন

সরকার বেশ কয়েক বার সড়ক পরিবহণ আইন প্রণয়নে এগোতে চাইলেও পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের চাপে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের ন’দফা দাবির অন্যতম ছিল বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারকে কড়া আইন করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২৮
Share:

আন্দোলনরত ছাত্রদের চাপে সড়ক পরিবহণ আইনের খসড়াটি বাংলাদেশের সংসদে পেশের জন্য সোমবার অনুমোদন দিল মন্ত্রিসভা। এ দিন স্কুলের ছাত্রদের একেবারেই ঢাকার সড়কে দেখা যায়নি। তার বদলে তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ছাত্ররা যথেচ্ছ ইটবৃষ্টি শুরু করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের হটিয়ে দেয়। কিন্তু গোলমেলে পরিস্থিতির কারণে ওই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় কাল থেকে ৬ দিন বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সরকার বেশ কয়েক বার সড়ক পরিবহণ আইন প্রণয়নে এগোতে চাইলেও পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের চাপে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের ন’দফা দাবির অন্যতম ছিল বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারকে কড়া আইন করতে হবে। সোমবার সেই আইনেরই খসড়া সংসদে পেশের জন্য অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই আইনে দুর্ঘটনায় হতাহত হলে দোষী ব্যক্তির পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাবাস ও জরিমানার কথা বলা হয়েছে। দুর্ঘটনার ধরন বুঝে প্রয়োজনে প্রাণদণ্ড পর্যন্ত দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ছাত্ররা রাস্তায় না-নামলে সরকার এই আইন প্রণয়ন করার পথে এগোত না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রবিবার একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ছাত্ররা অনেক বড় কাজ করেছেন।

রবিবার থেকেই নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে স্কুল পড়ুয়াদের জায়গা নিয়েছেন বেশি বয়সের কিছু যুবক। এঁরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে দাবি করলেও পুলিশের অভিযোগ, এদের অধিকাংশই বিরোধী বিএনপি ও জামাতে ইসলামি-র ছাত্র ও যুব কর্মী। এ দিন নর্থ-সাউথ, ইস্ট-ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ ও অন্য কয়েকটি দাবি তুলে রাস্তা অবরোধ করেন। মিছিল করে তাঁরা এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। শাসক দলের কিছু সদস্যও হেলমেটে মুখ ঢেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। কয়েক জন সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীকেও তারা মারধর করেছে বলে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। এ দিন একটি সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন বলেন, ‘‘বিএনপি-জামাতের গুন্ডা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করেছে। তারা দেশে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে।’’

Advertisement

ফেসবুকে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে যারা রাস্তায় নামা ছাত্রদের উত্তেজিত করেছে, তাদের খুঁজে বার করে বিচারের কাজও শুরু করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এর আগে নওশাবা আহমেদ নামে এক অভিনেত্রীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তিনি ফেসবুক লাইভ করে চোখের সামনে চার জন পড়ুয়াকে খুন ও এক জনের চোখ উপড়ে নেওয়ার ভুয়ো খবর প্রচার করেছিলেন। শহিদুল আলম নামে এক বর্ষীয়ান আলোকচিত্রীকেও একই অভিযোগে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে। ফেসবুক ও ইউটিউবে তিনি গুজব ও উস্কানি ছড়িয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement