বিসর্জনের পথে।
ফিরে যাচ্ছেন উমা। এই বিদায় অবশ্য চিরতরের জন্য নয়। তবে ঘরের মেয়েকে বিদায় দিতে কারই বা ভাল লাগে। তবুও বিদায়। প্রচলিত রীতি মেনেই। সিঁদুর খেলা বা বাড়ির লক্ষীর ঝাঁপিটি মায়ের পায়ে ছুঁইয়ে আনার তো রয়েছেই। সঙ্গে যোগ হয়েছে সেই স্মৃতিগুলো সেলফিতে ধরে রাখা। এর মাঝেই আগমনীর সুর আজ রূপ নিয়েছে বিসর্জনের ঢাকের বাদ্যে।
আজও আকাশ জুড়ে মেঘের রাজত্ব। কয়েক দফা জলও ঝরেছে। ঢাকার বিভিন্ন মণ্ডপের প্রতিমাগুলো নিয়ে দুপুর ৩টে নাগাদ পলাশি এলাকাতে সমাবেত হতে শুরু করেন উদোক্তারা। ট্র্যাকের গায়ে মণ্ডপের নাম। ধূপতি হাতে চলছে আরতি। বাজছে শব্দযন্ত্র। এ ভাবেই বাড়তে থাকে ভিড়। সেখানে তিরধারণে জায়গা নেই।
অকালবোধনে জ্যোৎস্না ছড়িয়েছিল যে সুসজ্জিত চাঁদ, সন্ধ্যায় তার সমস্ত রং যেন গলে পড়ছিল বুড়িগঙ্গার বুকে! নদীর জলে তখন বিসর্জনের সুর। সেই সুরে 'বাবার বাড়ি বেড়ানো’ শেষে ‘আনন্দময়ী’ দেবী ফিরে গেলেন ‘কৈলাসের দেবালয়ে’।
আরও পড়ুন
পুরনো ঢাকার পুজোতে মানুষের ঢল, দেখা মেলে না রাস্তার
নজর কাড়ছে ধামরাই বণিক বাড়ির অষ্ট ধাতুর দুর্গা প্রতিমা
বিকেলে মহানগর সার্বজনীন পুজো কমিটির আয়োজনে রাজধানীর পলাশির মোড় থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা ঢাকের তালে তালে সন্ধ্যায় পৌঁছে যায় বুড়িগঙ্গার ওয়াইজ ঘাটে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পক্ষ থেকে দেওয়া সিরিয়াল নম্বর অনুসারে প্রতিমা বিসর্জনের পালা শুরু হয়। ওয়াইজ ঘাটের বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে সর্বপ্রথম আসে ২৩০ লালমোহন স্ট্রিট থেকে আগত পারিবারিক পুজোর প্রতিমা। এর পর বিসর্জন শুরু হয়।
ওয়াইজ ঘাটে গত বছর ৭৬টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছিল। এ বার ১২৮টি প্রতিমা বিসর্জন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রশাসনের নির্দেশ অনুসারে, শনিবার রাত ৮টার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জনের পালা শেষ হওয়ার কথা। সেই অনুযায়ী ৫টি ট্রলার দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের কাজ চলছে। চলতি বছরে ঢাকার ২৩১টি মণ্ডপে পুজো হয়েছে। মহালয়ার মধ্যে দিয়ে এ দিন সকালে বিজয়া দশমীতে ‘বিহিত পুজো’ আর ‘দর্পণ বিসর্জনে’ দুর্গা পুজোর শাস্ত্রীয় সমাপ্তি হল।
কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিয়েছে পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভক্ত-পর্যটক। চট্টগ্রামেও প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছে সাগর সৈকতে। একই ভাবে সারা দেশে বিভিন্ন নদী ও জলাশয়ে চলছে বিসর্জনের পর্ব।
দেখুন ভিডিও
ছবি ও ভিডিও সৌজন্যে অনিন্দ্য টিটু