থমথমে ঢাকা। ছবি: এএফপি।
গুজব, পাল্টা গুজব, সেই গুজব ঘিরে সংঘর্ষ। সেই সঙ্গে কারা গুজব ছড়াচ্ছে তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের অষ্টম দিন, রবিবারও এ নিয়েই উত্তপ্ত থাকল ঢাকা, ঢাকার রাস্তা। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল মূলত তিনটি। নিরাপদ সড়ক, শনিবার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় দোষীদের শাস্তি ও নৌ পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ। এ দিন শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানাতে বড় সংখ্যায় হাজির হয়েছিলেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড়সড় জমায়েত করার পাশাপাশি রাস্তায় মিছিলও করেন তাঁরা। গত কালের পর আজও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ঢাকার জিগাতলা এলাকায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে পুলিশ। বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন। তাঁরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ধানমন্ডিতে আজও শিক্ষার্থীদের মিছিলে হেলমেট পরা কিছু যুবককে লাঠি হাতে হামলা চালাতে দেখা গিয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এই হামলায় আহত হয়েছেন। কারা এই হামলাকারী, ধন্ধ তা নিয়েই। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে বিএনপি ও জামাত শিবিরের নেতৃত্বেই এই হামলা হচ্ছে বলে দাবি আওয়ামি লিগের। যদিও আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লিগের নেতৃত্বে চলছে এই হামলা, উঠেছে সেই অভিযোগও। সুপরিকল্পিত ভাবে আন্দোলনের মুখ অন্যদিকে ঘোরানো হচ্ছে বলেই মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। পাশাপাশি যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সোমবার মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহণ খসড়া বিল নিয়ে আলোচনা হবে, ছাত্রছাত্রীদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। যদিও সেই খসড়ায় প্রাণদণ্ডের বিধি থাকলে বাসমালিক ও চালক সংগঠনগুলি তা মেনে নেবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে।
ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পড়ুয়ারা। ছবি: এএফপি।
যদিও ইন্টারনেট স্পিড কমিয়ে দেওয়া নিয়ে টেলিকম কোম্পানিগুলির দাবি আর সরকারের বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন জানাচ্ছে, যান্ত্রিক কারণেই শনিবার বিকেল থেকে কমে গিয়েছে ইন্টারনেট স্পিড। মোবাইল সংস্থাগুলি আবার জানাচ্ছে, সরকারের তরফে তাঁদের কাছে ইন্টারনেটের স্পিড টুজি করে দেওয়ার অনুরোধ হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ন’বছরের শ্রেয়সকে ব্রিটেনে রেখে দিতে জোর তৎপরতা, কেন জানেন?
আরও পড়ুন: মাছির ধাক্কায় হাত ছাড়া বিশ্ব রেকর্ড
গত রবিবার রাজধানী ঢাকায় দুই শিক্ষার্থী বাসে চাপা পড়ে মারা যায়। তারপর থেকেই পড়ুয়া বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা। আন্দোলন ছড়িয়েছে দেশের অন্যান্য জায়গাতেও। যা অনেককেই মনে করাচ্ছে ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনকে। ২০১৩ সালেও রাজাকারদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে পথে নেমেছিল ছাত্রছাত্রীরা, উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ।