Bangladesh News

দেনার দায়ে বন্ধ বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর সিটিসেল

বন্ধ হল বাংলাদেশের প্রথম মুঠোফোন অপারেটর প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড বা সিটিসেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০৯
Share:

বন্ধ হল বাংলাদেশের প্রথম মুঠোফোন অপারেটর প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড বা সিটিসেল। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিটিআরসির একটি প্রতিনিধিদল র‌্যাব-পুলিশ নিয়ে রাজধানী ঢাকার মহাখালিতে কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ে ঢুকে অপারেশনাল কার্যালয় বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসি-র প্রধান কার্যালয়ে গত কাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশ ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, “বিটিআরসি-র বকেয়া পরিশোধ না করায় টেলিযোগাযোগ আইনের ৫৫(৩) ধারার সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্ধ স্থগিত করা হয়েছে।”

Advertisement

তারানা হালিম বলেন, “সিটিসেল সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। ব্যাঙ্কের কাছে তারা কোটি কোটি টাকা দেনা বাকি পড়েছে। গণমাধ্যমগুলোতেও বিজ্ঞাপনের দেনা পরিশোধ করেনি সিটিসেল। এই সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। কমতে কমতে সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেলের গ্রাহক দেড় লাখে এসে ঠেকেছে।” আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে আপিল বিভাগের রায় অনুসারে আইন মেনেই বিটিআরসি-র ক্ষমতাবলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট বকেয়ার ৪৭৭ কোটি টাকার দুই-তৃতীয়াংশ ৩১৫ কোটি টাকা বুধবার নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টু-জি লাইসেন্সের তরঙ্গ বরাদ্দ ও নবীকরণ ফি, রাজস্ব ভাগাভাগি, বার্ষিক তরঙ্গ ফি, সামাজিক সুরক্ষা তহবিল, বার্ষিক লাইসেন্স ফি, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও বিলম্ব ফি বাবদ সিটিসেলের এই পরিমাণ অর্থ বকেয়া রয়েছে। বুধবার সিটিসেল কর্তৃপক্ষ বিটিআরসির কার্যালয়ে ১৪৪ কোটি টাকা জমা দেয়।

Advertisement

সিটিসেলে বর্তমানে ৫৫ ভাগ শেয়ারের মালিক দেশীয় শিল্পগোষ্ঠী প্যাসিফিক মোটরস ও ফার ইস্ট টেলিকম। এর মধ্যে প্যাসিফিক মোটরসের শেয়ারের পরিমাণ ৩৭.৯৫ শতাংশ আর ফার ইস্ট টেলিকমের ১৭.৫১ শতাংশ। বাকি ৪৪.৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক সিঙ্গাপুরস্থিত টেলিযোগাযোগ পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সিংটেল।

প্যাসিফিক মোটরস ও ফার ইস্ট টেলিকমের কর্ণধার প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম মোর্শেদ খান মালিকানাধীন কোম্পানিটিকে একাধিক বার সময় নিয়েও পাওনা দিতে পারেনি। তারা আপাতত দেনা মেটাতে পারবে না বলেই মনে করছেন তারানা হালিম।

এর আগে পাওনা না পেয়ে গত জুলাই মাসে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)। পরের মাসে তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। ওই নোটিসের পর সিটিসেল আদালতে গেলে আপিল বিভাগ টাকা পরিশোধের শর্তসাপেক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সিটিসেলকে দুই মাস সময় দিয়েছিল। গত ২৯ অগস্ট ওই আদেশ দেয় আদালত।

বিটিআরসি-র আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব জানিয়েছেন, ১৭ অবস্টের আগে পর্যন্ত সিটিসেলের কাছে বিটিআরসি-র পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকা। এর দুই-তৃতীয়াংশ এখন থেকে এক মাসের মধ্যে, আর এক-তৃতীয়াংশ পরবর্তী এক মাসে পরিশোধ করতে হবে। অন্য দিকে ১৭ অগস্টের পর থেকে প্রতিদিন বিটিআরসি-র কাছে আরও ১৮ লাখ টাকা করে পাওনা হচ্ছে। প্রতিদিনের এই টাকা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে আদালত জানিয়েছে, টাকা না পেলে বিটিআরসি যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement