এস হে: নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। শনিবার ঢাকায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী
সকাল থেকে লাখো মানুষের ভিড়ে সরগরম ঢাকা। আজ পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরের সুচনা। রমনার বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রাণের মেলা ছড়িয়েছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে।
এগারোটা বছর আগেও পয়লা বৈশাখের ছবিটা এ রকম ছিল না। বিএনপি-জামাতে ইসলামি জমানার বাংলাদেশ তখন নানা ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের খোলা ময়দান। বাংলা নববর্ষ পালন চলবে না— ফতোয়া দিয়েছিল তারা। আয়োজকেরা সরকারের কাছে গেলে জানিয়ে দেওয়া হয়, পয়লা বৈশাখ পালন করতে চাইলে নিজের ঝুঁকিতে করুন।
এখানেই শেষ নয়। খালেদা জিয়া সরকারের মন্ত্রীরা খোলাখুলিই ঘোষণা করেন, সরকার এই উৎসব পালনে আর পাশে থাকবে না। মুষড়ে ছিল ঢাকা। ঘরোয়া ভাবে নববর্ষ পালিত হলেও প্রাণের ছোঁয়া ছিল না।
সেই সরকারের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে আসার পর পরই আরও একটা পয়লা বৈশাখে বাংলাদেশ যেন বন্ধন মুক্তির আনন্দে ফেরে। তার পরে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে মৌলবাদকে মোকাবিলায় নববর্ষের মতো এই সার্বিক অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠানকেই হাতিয়ার হিসেবে তুলে নেয়। এর মধ্যেই ইউনেস্কো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’-এর স্বীকৃতি দেয় নববর্ষে ঢাকার মঙ্গল শোভাযাত্রাকে। তার পরে বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে পয়লা বৈশাখ। চট্টগ্রাম থেকে যশোর, ঠাকুরগাঁ থেকে রংপুর বা রাজশাহি, সর্বত্র নববর্ষ এখন রঙের উৎসব।
আরও পড়ুন: ঢাকার পয়লা যেন অষ্টমীর একডালিয়া
মৌলবাদীরা বসে নেই। গত বারই চট্টগ্রামে শিল্পকলা একাডেমির পড়ুয়ারা শোভাযাত্রার পথের দু’পাশের দেওয়ালে যে আল্পনা এঁকেছিলেন, রাতের অন্ধকারে কালো রং ঢেলে দেওয়া হয় তাতে। কয়েক ঘণ্টায় সেই দেওয়ালে কলি ফিরিয়ে ফের আল্পনায় রাঙিয়ে তুলেছিলেন শিল্পীরা। এ বার যাতে ফের এমন লুকোনো হামলা না-হতে পারে, সে জন্য রাত জেগেছেন তরুণেরা। তেমন কিছু এ বারে ঘটেনি।