Bangladesh

বাংলাদেশের সফটওয়্যারের বিক্রি বিদেশে বাড়ছে, কমছে দেশে

ঘরের জিনিস হেলাফেলা, বিদেশি পণ্যে মনগলা। ভালমন্দ যেমনই হোক বেশি দামে ঘরে তোলা। বিচিত্র মানসিকতা। ঢাকা-কলকাতার বাঙালি এরকমই। কেনাকাটায় ফরেন গুডস হলেই হল। আর কথা নেই। চমৎকার দেশি জিনিস পাশে থাকলেও নেড়েচেড়ে দেখবে না। বাঙালির অদ্ভুত স্বভাবটাই বিদেশি সংস্থার মূলধন।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৪:০৭
Share:

ফাইল চিত্র

ঘরের জিনিস হেলাফেলা, বিদেশি পণ্যে মনগলা। ভালমন্দ যেমনই হোক বেশি দামে ঘরে তোলা। বিচিত্র মানসিকতা। ঢাকা-কলকাতার বাঙালি এরকমই। কেনাকাটায় ফরেন গুডস হলেই হল। আর কথা নেই। চমৎকার দেশি জিনিস পাশে থাকলেও নেড়েচেড়ে দেখবে না। বাঙালির অদ্ভুত স্বভাবটাই বিদেশি সংস্থার মূলধন। দাপিয়ে বাণিজ্য করে বাংলাদেশ-ভারতে। এত বড় বাজার পাবে কোথায়। আবার দেশি জিনিস যখন বিদেশে কদর পায় তখন দেশের লোক চমকায়। অবাক হয়ে ভাবে, আমাদের জিনিস আমরা নিচ্ছি না, ওরা নেয় কী করে। একশোর বেশি দেশ বাংলাদেশের সফটওয়্যারের জন্য পাগল। নিচ্ছে চোখ বুজে। গুণের তুলনা নেই। দামে কম। রফতানি বাড়তে বাড়তে ১০০ কোটি ডলারের মুখে। সফটওয়্যারের সবচেয়ে বড় সংগঠন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিসেস বা বেসিস-এর সদস্য ১৮৫টি কোম্পানি বিশ্ববাজারে চুটিয়ে ব্যবসা করছে। পাশাপাশি ফ্রিলান্সাররাও রফতানি বাড়াচ্ছে। তার সবটাই বৈধ চ্যানেলে নয় বলে আয়টা অস্পষ্ট। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসেবেও ঠিকঠাক ধরা পড়ছে না। আয় লুকনোর কোনও কারণ নেই। সরকার ট্যাক্স-ভ্যাট কিছুই নেয় না। দরকার শুধু রফতানির বৈধ কাগজপত্র পেশ। তাতেই আলস্য। এ যেন ফ্রি পাস পাওয়ার সুযোগ থাকতেও, না নিয়ে বিনা টিকিটে সফর।

Advertisement

আরও পড়ুন- দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোন সম্ভাবনা নেই: শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের সফটওয়্যার চলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন সংস্থায়। আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় লুফে নিচ্ছে। ভুটানের ই-জিপি, নেপালের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের সফটওয়্যারে। চমৎকার কাজ। দাম অর্ধেক। অন্য দেশে যেটা ১০ কোটি, বাংলাদেশেরটা মাত্র ৫ কোটি।

Advertisement

ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার পরই বাংলাদেশে সফটওয়্যারে উন্নতি। দশ বছর আগেও ভরসা করতে হত বিদেশের উপর। এখন তার দরকার হয় না। উল্টে দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে পাঠায়। ডলার আয়ের নতুন রাস্তা প্রশস্ত। দরকার দেশের বাজার বাড়ান। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় আইন আছে, সব দেশি কোম্পানিকেই অন্তত ৫০ শতাংশ দেশি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। এ নিয়মটা আরও অনেক দেশে চালু। বাংলাদেশ একই রাস্তায় হাঁটলে ক্ষতি কী। দেশের বাজারে দেশি সফটওয়্যারের ব্যবহার যেভাবে কমছে সেটা উদ্বেগের। বিক্রি ৮ কোটি ডলার থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ডলারে। দেশের ব্যাঙ্কিংয়ে দেশি সফটওয়্যার মাত্র ৩৬ ভাগ। বাকিটা বিদেশি।

সরকার সতর্ক। দু’বছরে পরিস্থিতি পাল্টানোর পরিকল্পনা। সফটওয়্যার পার্ক তৈরিতে জোর। ১২টি পার্ক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। ঢাকায় কাওরান বাজারে জনতা সফটওয়্যার পার্কে ১৭টি কোম্পানির কাজ শুরু। গাজিপুরের কালিয়াকেরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে বারো মাসেই চালু হয়ে যাবে তথ্য প্রযুক্তির কাজ। যশোহর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে আগ্রহীদের জায়গা দেওয়ার কাজ শেষ। মহাখালি আইটি ভিলেজ, বরেন্দ্র সিলিকন সিটি রাজশাহি, ইলেকট্রনিক সিটি সিলেট, চন্দ্রদীপ ক্রাউডচরে নির্মাণ অব্যাহত। এক লাখ ছেলেমেয়েকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আইটি সেক্টরে কাজের উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে। এসবই বিদেশি সংস্থার মাথাব্যথার কারণ।

আরও পড়ুন- পুজো স্পেশ্যাল সেরা মেনু: আনন্দ উৎসবে

আরও পড়ুন- পুজোর পরেই দুর্গা ফের বাক্সবন্দি

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement