ফের জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলল বাংলাদেশে। শনিবার ভোর থেকে টানা দশ ঘণ্টার অভিযানে অন্তত ১১ জন জঙ্গিকে নিকেশ করল বাংলাদেশের যৌথ বাহিনী। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে এক জন নব্য জেএমবির সদস্য বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার ভোরে গাজিপুর ও টাঙ্গাইলে গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গাজিপুর জেলায় দু’টি ও টাঙাইল জেলাতে একটি, মোট তিনটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় বাংলাদেশের যৌথ বাহিনী। ভোরে গাজিপুর সিটি করপোরেশন এলাকার হারিনালে অভিযানের পর বেলা পৌনে এগারোটার দিকে নোয়াগাঁওয়ের আফারখোলা পাতারটেক এলাকার একটি দোতলা বাড়িতে অভিযান শুরু করা হয়। সোয়াত, বম্ব ডিস্পোজাল দল, জঙ্গি দমন শাখা, জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথ ভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-হাইকমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, মোট ১১ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে পুলিশের অভিযানে।
নিহতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। ‘অপারেশন শরত তুফান’ নামে ওই গোটা অভিযানের তদরকি করেন জঙ্গি দমন শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম।
পুলিশ সূত্রের খবর, যে বাড়িতে অভিযান চলেছে তার মালিক সোলেমান সরকার। সোলেমান সৌদি আরবের প্রবাসী। বাড়িটি দেখাশোনা করতেন তাঁর ভাই ওসমান গনি। তিনি একটি মাদ্রাসায় আরবি পড়ান। তিন মাস আগে তার থেকে ওই দোতলা বাড়িটি ভাড়া নেন তিন যুবক। অভিযানের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, নীচের তলার বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পর দোতলার জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এর পরই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতেই মৃত্যু হয় জঙ্গিদের।
দ্বিতীয় ডেরা থেকে গ্রেনেড, আগ্নেয়াস্ত্র, কয়েকটি চাপাতি, ও একটি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার হয়েছে। শনিবার দুপুরে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানান, গাজিপুরের প্রথম অভিযানে নিহত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হল রাশেদ মিয়া ও তৌহিদুল ইসলাম। ওই বাড়ির মালিকের কাছ থেকে তাদের নাম জানা গেছে। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে। সফল জোড়া অভিযানের পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এখানে যারা ছিল, সবাই জঙ্গি দলের সঙ্গে জড়িত। কিছু একটা করার জন্য তারা এখানে ছিল। এদের পরিচয় আমরা পরে জানাব।’’ গুলশন ও শোলকিয়ায় হামলার পর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটিতে অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন। নিহত হন বেশ কয়েক জন জঙ্গিও। যার জেরে ইতিমধ্যেই নড়বড়ে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদীদের সাংগাঠনিক ভিত। ভবিষ্যতেও অভিযান জারি থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন।