সিলেটের ডেরা দখল, অভিযান তবু চলছেই

চার দিন অভিযান চলার পরে অবশেষে কিছুটা স্বস্তি পেল বাংলাদেশ সরকার। সিলেটের শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি ঘাঁটি ‘আতিয়া মহল’ অবশেষে সেনা কম্যান্ডোরা দখল করেছেন বলে দাবি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসানের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৬
Share:

তৎপর: সিলেটের শিববাড়িতে তৎপর কম্যান্ডো বাহিনী। নিজস্ব চিত্র

চার দিন অভিযান চলার পরে অবশেষে কিছুটা স্বস্তি পেল বাংলাদেশ সরকার। সিলেটের শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি ঘাঁটি ‘আতিয়া মহল’ অবশেষে সেনা কম্যান্ডোরা দখল করেছেন বলে দাবি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসানের। ওই বাড়ি থেকে তিন জন পুরুষ ও এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে শিববাড়িতে প্রচুর বিস্ফোরক ছড়িয়ে রেখেছে জঙ্গিরা। সেইসঙ্গে ওই এলাকায় জঙ্গি গোষ্ঠীর আরও সদস্যের লুকিয়ে রাখার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না সেনা ও পুলিশ কর্তারা। ফলে আপাতত অভিযান শেষের কথা ঘোষণা করেননি তাঁরা।

Advertisement

সিলেটের অভিযান শেষ হওয়ার আগেই আজ সন্ধ্যায় ঢাকায় তিনটি বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। তাদের দাবি, সেখান থেকে চার জন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত কাল সাংবাদিক বৈঠকের পরেই শিববাড়ির ৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সাংবাদিকদের। ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয়দের যাতায়াতও নিয়ন্ত্রণ করে বাহিনী। রাত এগারোটা নাগাদ বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। পুলিশের দাবি, ‘আতিয়া মহল’ থেকে বোমা ছোড়ে জঙ্গিরা। আধ ঘণ্টার ফারাকে ফের ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায় ওই বাড়ি থেকে। তার পর থেকে সারা রাত অবশ্য আর কোনও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। অভিযান শুরুর পর-পরই ‘আতিয়া মহল’-সহ বেশ কয়েকটি বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পুলিশ। সূর্য ডুবলে ভরসা এখন জেনারেটরই।

Advertisement

আজ সকাল ৬টা থেকে দফায় দফায় গোলাগুলি শুরু হয় শিববাড়িতে। দুপুর দেড়টা নাগাদ প্যারা কম্যান্ডো বাহিনী লাউড স্পিকারে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু তাতে কান দেয়নি জঙ্গিরা। কম্যান্ডোরা বাড়ির এক দিকের দেওয়ালে বড় গর্ত করে দেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, বাড়ির মধ্যে মজুত বিস্ফোরকে জঙ্গিরা আগুন ধরিয়ে দিলে দেওয়াল ধসে পড়তে পারে। তাই বিস্ফোরণের তীব্রতা কমাতে গর্ত করা হয়।

এর পরে বিশেষ কৌশলে ‘আতিয়া মহল’-এ ঢুকে পড়ে কম্যান্ডো বাহিনী। দিনের শেষে বাড়ি চলে আসে তাঁদের দখলে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসানের দাবি, ‘আতিয়া মহল’-এ তিন পুরুষ ও এক মহিলা জঙ্গি রয়েছে বলে সেনাকে জানিয়েছিল পুলিশ। চার জনেরই লাশ পেয়েছেন কম্যান্ডোরা। তবে তাদের শনাক্ত করা এখনও সম্ভব হয়নি। ‘আতিয়া মহল’-এ কোনও শীর্ষ জঙ্গি নেতা লুকিয়ে থাকতে পারে বলে জানতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা।

এর মধ্যেই সিলেটে হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইব, ইমোর মতো বেশ কয়েকটি ‘মেসেজিং অ্যাপ’-এ ছড়ানো গুজব মাথাব্যথা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। তারা সাধারণ মানুষের ব্যাগে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দিতে পারে। গুজব-বার্তায় বলা হচ্ছে, ‘আতিয়া মহল’ থেকে বেরিয়ে ভিড়ে মিশে গিয়েছে কয়েক জন জঙ্গি। কারা, কেন এই মেসেজ ছড়াচ্ছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন গোয়েন্দারা ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement