"মেঘ পিয়োনের ব্যাগের ভেতর মন খারাপের দিস্তা/ মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়, ব্যাকুল হলে তিস্তা।"
এ সেই 'মেঘ কুয়াশার' গন্তব্যে ভ্রমণ! যেখানে পর্যটকদের ব্যাকুল মনকে আনন্দিত করে তুলতে তিস্তা নয়, আছে মহানন্দা। ডুয়ার্সের অন্তর্গত স্বল্প চেনা এই পর্যটন স্থানটির পোশাকি নাম ঝান্ডি।
জেলা হিসেবে কালিম্পংয়ের ভিতর পড়ে। উত্তরবঙ্গের সমতলের শেষ আর পাহাড়ের শুরু যেখানে, ঝান্ডির অবস্থান সেখানে। গরুবাথান হয়ে লাভা যাওয়ার পথে এই ঝান্ডির দেখা পাবেন।
শান্ত, নিরিবিলি ঝান্ডির প্রধান আকর্ষণ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০০ ফুট উঁচু এই পর্যটন স্থান থেকে দেখতে পাওয়া অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং একই সঙ্গে সমতলে বিস্মৃত ডুয়ার্সের ঘন সবুজ জঙ্গল ও তার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীর আঁকাবাঁকা পথ।
রাতে ঝান্ডি থেকে বিস্তৃত সমতল জুড়ে জ্বলে ওঠা আলোর রাশি দেখতে অনির্বচনীয় সুন্দর লাগে। ঝান্ডির আরেক আকর্ষণ নানান চেনা-অচেনা বিদেশি পাখি। যাঁরা পাখি দেখতে ভালবাসেন, এই স্থান তাঁদের বাড়তি পছন্দের হতে পারে।
ঝান্ডির সর্বোচ্চ 'ভিউ পয়েন্ট' ঝান্ডিদারা! যেখানে দাঁড়িয়ে চমৎকার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়।
লাভা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে ঝান্ডি। ফলে এখান থেকে সহজেই লাভা-ললেগাও-রিশপ বেড়িয়ে আসতে পারেন। ঘুরে দেখতে পারেন গরুবাথান পিকনিক স্পট ও সামাবিয়ং চা-বাগান।
ঝান্ডি থেকে ঘুরে আসতে পারেন প্রাচীন ভূটান রাজার দুর্গ ডালিম ফোর্ট, কিংবা গিঁটখোলা থ্রি সিস্টার ওয়াটার ফলস্।এখানে একই জায়গায় তিনটে আলাদা আলাদা জলপ্রপাত আছে। সাধারণত যা বিরল।
এছাড়া ঝান্ডির হোমস্টে-র সামনের খোলা বাগান চত্বরে সন্ধ্যেয় 'বন ফায়ার', 'বার-বি-কিউ' উদযাপনও দারুণ জমাটি লাগে। ঝান্ডি বেড়ানোর সেরা সময় অক্টোবর থেকে মার্চ।
কীভাবে যাবেন - ঝান্ডির নিকটবর্তী রেল স্টেশন নিউ মাল জংশন। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেসে চেপে ওই স্টেশনে নামতে হবে। শিলিগুড়ি থেকে সড়কপথে ঝান্ডি ৮৫-৯০ কিলোমিটার। গাড়ি ভাড়া ৩০০০-৩৫০০ টাকা।
থাকার জায়গা - একাধিক রেস্তোরাঁ, হোম-স্টে আছে।