লম্বা পুজোর ছুটি। সারা বছর কাজের মাঝে কয়েকটা দিনের শান্তি খুঁজতে অনেক দূরে পালানোর পরিকল্পনা কিংবা চেনা গন্তব্যের টানেই বারবার ছুটে যাওয়া। প্লেনে চেপে ভিন রাজ্য থেকে ভিন দেশ, সব জায়গায় পৌঁছে পারে পারেন এই ছুটিতে। আর যদি এই প্রথম প্লেনে করে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকে, তা হলে কলকাতা বিমানবন্দর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা অবশ্যই দরকার! এই প্রতিবেদনে রইল তারই সুলুকসন্ধান।
বিমানবন্দরের এদিক সেদিক জানুন-টার্মিনাল ২-এর কাছ থেকে যাত্রীরা যে কোনও অন্তর্দেশীয় বা আন্তর্জাতিক উড়ান ধরতে পারেন।অন্তর্দেশীয় উড়ানের জন্য প্রথম দিকের গেটগুলি এবং আন্তর্জাতিক উড়ানের জন্য তার পরের দিকের গেটগুলিতে যেতে হবে।টার্মিনাল ২-তে পাবেন ১০৪টি চেক-ইন কাউন্টার, ৪৪ ইমিগ্রেশন কাউন্টার, ১৬টি ব্যগেজ ক্যারাউজেল এবং ১৮টি এরো-ব্রিজ। আন্তর্জাতিক ও অন্তর্দেশীয় উড়ানের ক্ষেত্রে ইনলাইন ব্যাগেজ স্ক্রিনিং কাজ করে এখানে।
ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই কলকাতা বিমানবন্দর। কিন্তু যাত্রীরা অনেক সময়েই বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, আরামদায়ক বসার ব্যবস্থার অভাব আর ইমিগ্রেশনে সব সময় লম্বা লাইন এই বিমানবন্দরের প্রধান সমস্যা।
বিমানবন্দরে খাবারের ঠিকানা-
টার্মিনাল ২-এর অন্তর্দেশীয় উড়ানের জায়গায় একটি ফুড কোর্ট আছে। সেখানে নানা রকমের খাবার পেয়ে যাবেন। রয়েছে আলট্রা বার, দি আইরিশ হাউস পাব, কপার চিমনি, পিজ্জা হাট, সাবওয়ে, কে এফ সি-সহ বিভিন্ন কফি শপ ও খাবারের দোকান। যদিও আন্তর্জাতিক উড়ানের জায়গায় সীমিত খাবারের দোকান ও কফি শপের অপশন আছে।
পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ও গাড়ির দিক নির্দেশনা-
কলকাতা বিমানবন্দরের সঙ্গে শহরের সংযোগ স্থাপন করে ভিআইপি রোড। কিন্তু এই রাস্তায় যানজট পেতে পারেন। তা এড়াতে ভিআইপি রোড থেকে ই এম বাইপাস ও মা উড়ালপুল ধরে পার্ক সার্কাসে চলে যেতে পারেন।
বিমানবন্দরে দুটি পার্কিং লট আছে, একটি আন্ডারগ্রাউন্ড ও অন্যটি বাইরে। আধ ঘণ্টার জন্য ৪০ টাকা ভাড়া দিয়ে গাড়ি পার্ক করে রেখে যেতে পারেন।
কেনাকাটা করবেন কোথায়?
বিমানবন্দরে গিয়ে খেয়াল হল বেড়াতে যাওয়ার জন্য খুব প্রয়োজনীয় কোনও জিনিস নিতে ভুলে গিয়েছেন? কুছ পরোয়া নেই। ২০১৭-র পর থেকে টার্মিনাল ২-তে আন্তর্জাতিক ও অন্তর্দেশীয় সব রকম উড়ানের ডিপার্চার এলাকাতেই এখন আছে রকমারি কেনাকাটার স্পট। ভাল ব্র্যান্ডের পোশাক থেকে শুরু করে ব্যাগপত্র, লেদারের জিনিস, জুতো বা প্রসাধনী- সবই কিনতে পারবেন এই জায়গায়।
লে-ওভারের ক্ষেত্রে কী করবেন?
টার্মিনাল ২-এর কাছে কোনও ট্রানজিট হোটেল নেই। বিমানবন্দরের সবথেকে কাছাকাছি হোটেল আপাতত ২০১৯ সালে তৈরি 'হলিডে ইন এক্সপ্রেস কলকাতা এয়ারপোর্ট', বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটা পথে এই হোটেল।
টার্মিনাল ২-এর মেজেনাইন ফ্লোরের উপরে ১২টি বিশ্রাম নেওয়ার ঘর আছে। অ্যারাইভালের জায়গা থেকে সেখানে পৌঁছে যাওয়া যায়। বিমানবন্দরের ম্যানেজারের কাছে গিয়ে গেট ৩সি দিয়ে ঢুকে যাত্রীরা বুক করতে পারবেন এই ঘর। দু'জন থাকার মতো ঘরে ১০০০ টাকা এবং ডরমেটরি ঘরের জন্য ৭০০ টাকা খরচ ধরে রাখতে পারেন। এ ছাড়াও বিমানবন্দর এলাকায় আশেপাশে নানা রকম বাজেটে থাকার অনেক জায়গা আছে। এ ছাড়া বিমানবন্দরে অ্যারাইভাল আর ডিপার্চারের জায়গায় এটিএম আছে, যেগুলি ব্যবহার করার জন্য ২০০ টাকা ফি লাগতে পারে। কারেন্সি এক্সচেঞ্জ কাউন্টার ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে এখানে।
৩০ দিন পর্যন্ত বিমানবন্দরের লাগেজ স্টোরেজ ফেসিলিটিতে জিনিসপত্র রেখে যাওয়া যায়। এটিও ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। অ্যারাইভালের জায়গায় কাউন্টার ১৮-য় গেট সি-র কাছে বুকিংয়ের ব্যবস্থা আছে। ডিপার্চারের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ম্যানেজারের অফিসের কাছে গিয়ে বুকিং করতে হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টার জন্য ৪০ টাকা করে ভাড়া।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।