আমাদের কাছে যেদিন থেকে মোবাইল ফোন এসেছে , সেদিন থেকেই বেশ কয়েকটি বিষয় আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করেছে। সম্পর্ক এখন টিকে আছে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে। আড্ডা সেটাও তাই। সামনাসামনি হওয়ার ইচ্ছাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে ভিডিও কল নামক মাধ্যম। আরেকটি বিষয় হয়তো আমরা লক্ষ করিনি— আমাদের জীবন থেকে রিস্ট ওয়াচ বা হাত ঘড়ির সঙ্গ ত্যাগের একটা প্রবণতা দেখা যায়। এখন সময় দেখার কথা এলেই সবাই হাতে রাখা মোবাইল ফোনটির দিকে তাকিয়ে বলে দেন।অ্যালার্মটাও ওই মোবাইল ফোনেই দিয়ে রাখে।
বেশ কয়েক বছর ধরে হাত ঘড়ির চাহিদা একেবারেই কমতে শুরু করেছিল। অনেকে বলছেন এটা অনেকটা সেই ফ্যাশনের অঙ্গ হিসাবে নিজের হাতে রাখা। কিন্তু এমন অবস্থায় যদি জানতে পারেন যে গত কয়েক বছরে হাতঘড়ির চাহিদা প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে, তা হলে একটু অবাক হতেই হবে। এই বছর মানে ২০১৯-এ বিভিন্ন ঘড়ির দোকানে গিয়ে চাহিদার কথা জানতে চাওয়া হলে তাঁরা বলেন, এ বছর আগের বেশ কয়েকটি বছরের তুলনায় বিক্রি অনেকটাই বেশি। এ ক্ষেত্রে সাধারণ ঘড়ির থেকে স্মার্ট ওয়াচের চাহিদা একটু বেশি। আর সাধারণ ঘড়ির ক্ষেত্রে একটু বড় ডায়ালের ঘড়ির চাহিদা বেশি। তবে স্মার্ট ওয়াচের চাহিদা বেশ ভালই। কেননা এই ঘড়ি আমাদের জীবনের সঙ্গে শুধু সময় নয়, আমাদের শরীরচর্চার একটা অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।
কী ভাবে? একটা উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন। আমাদের চিকিৎসকরা সময় মেনে নানা রকম কাজ করতে বলেন। সেই বিষয়টাকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মনিটরিং বা দেখভাল করে এই স্মার্ট ঘড়ি। আবার বেশ কিছু এমন ঘড়ি আছে , যেটি আপনি বিপদে পড়লে বিপদ সঙ্কেত দেবেই, সঙ্গে সেই বিপদের খবর পাঠিয়েও দেবে আপনার কাছের জনের কাছে। শুধু তাই নয়, এই বিপদ সঙ্কেত চলে যেতে পারে স্থানীয় থানাতেও। এর সঙ্গে আপনি আপনার ঘড়িতে আগে থেকেই নানা বিপদ বা জরুরি প্রয়োজনের কথা রেখে দিতে পারেন। উপযুক্ত সময় সে সব মনে করিয়ে দিয়ে আপনাকে সাহায্য করবে আপনার হাতের ঘড়িটি। ফলে এখন হাতঘড়ি শুধু আর সময় দেখার কাজে নয়, আরও অনেক কিছু কারণেই আপনার বন্ধু হয়ে উঠছে। অন্যান্য ঘড়ির তুলনায় একটু দাম বেশিই হয় এই স্মার্ট ঘড়িগুলর।
আরও পড়ুন:পুজোয় ঘুরতে যাওয়া এখন আরও সহজ, লাগেজ নিজেই নিজের বাহন!
এই উৎসবের মরশুমে আপনার কাছে কোন স্মার্ট ঘড়িটি পছন্দের তালিকায় উঠে আসতে পারে রইল তার হদিস।
যদিও এই তালিকায় বেশ কিছু অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ওয়াচ রয়েছে। শীর্ষে অবশ্যই অ্যাপল সিরিজ ৪-এর স্মার্ট ঘড়িগুলি রয়েছে, এর পরেই রয়েছে স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজ। তবে টিক ওয়াচ সিরিজের দিকে ঝুঁকলে পকেটের সাশ্রয় হতে পারে। ফসিলস আছে এই তালিকায়। এই সব ঘড়িগুলিই ১৮ হাজার বা তার বেশি দামের।
এ বার আসা যাক আমাদের সাধ্যের মধ্যে চাহিদা পুরণের কিছু ঘড়ির কথায়। যেখানে আমরা স্মার্ট ঘড়ির সব স্বাদই পেতে পারি।
ফার্স্ট ট্র্যাক রিফ্লেক্স ২.০
এই উৎসবের মরসুমে বেশ ছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে এই ঘড়িটি। দাম দু’হাজার টাকার মতো হলেও পাওয়া যাচ্ছে দেড় হাজার টাকার মধ্যে। কী সুবিধা পেতে পারি? এর মাধ্যমে যেমন মেসেজ দেখতে পারেন, মোবাইল ক্যামেরার সঙ্গে যুক্ত করে ঘড়ি ব্যবহার করেই ছবি তুলে পারেন। আর শরীরচর্চার ক্ষেত্রে, যেমন আপনি কতটা হাঁটলেন আর সেই কারণে আপনার ক্যালোরি কতটা পুড়ল , সেটা বলে দেবে আপনার এই হাত ঘড়ি।
আরও পড়ুন:পুজোয় ডবল মজা মোবাইলে বাড়তি স্ক্রিন
টাইটান জাক্সট প্রো
এই ঘড়িটি আপনার মোবাইল ফোনের সঙ্গে যুক্ত করে নিলে নোটিফিকেশন থেকে মোবাইল ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ তো হবেই সঙ্গে আপনার ফিটনেসের ক্ষেত্রে নানা রকম সাহায্য করবে। এই গোল ডায়ালের ঘড়িটি আবার জলের মধ্যে পড়লেও কিছু হবে না। আর এর সমস্ত তথ্যকে রেখে দেবে ক্লাউডে। ফলে আপনার যে কোনও তথ্যের প্রয়োজন হলে ক্লাউড থেকে আপনার মোবাইলে নামিয়ে নিতে পারেন। তবে পকেটে চাপ পড়বে একটু বেশিই, ছাড় দিয়েও কুড়ি হাজারের উপরে পড়বে এর দাম।