প্রস্তুতি চলছে
'বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছো ঈশ্বর…'
- স্বামী বিবেকানন্দ
এ বার পুজোর আগে থেকেই শহর কলকাতা জুড়ে জীবন্ত দেবতারা বহুরূপে বাস থেকে মেট্রো, অটোর লাইন থেকে গড়িয়াহাট মোড়-- সর্বত্র ঘুরে বেড়াবেন।
অবাক হচ্ছেন? এ আবার হয় নাকি! হয়, মানে হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই। এ বছর আলিপুর সর্বজনীনের পুজো ৭৯ বছরে পা দিল। এ বছর এখানকার দুর্গাপুজোর থিম ‘সং কল্প’। ‘সং’ বলতে ‘বহুরূপী’এবং ‘কল্প’ অর্থাৎ ‘রূপ’।বাংলার প্রান্তিক লোকশিল্প বহুরূপীই এই থিমের কেন্দ্রবিন্দু।
আলিপুর সর্বজনীনের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য সাক্ষাৎকারে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “এ বার পুজোর প্রচারে আমরা ব্যানার, হোর্ডিং ব্যবহার করছি না। বহুরূপীরা নানা রূপে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবেন। হয়তো দেখা যাবে, মা দুর্গা গড়িয়াহাটে ব্লাউজ কিনছেন বা গণেশ মেট্রো থেকে নামছেন। এই ছবিগুলো দিয়েই প্রচার হবে।”
উদ্যোক্তাদের তরফে আরও জানা যায় যে, পুজোর বেশ আগে থেকেই এই প্রচার চলবে। পুজোর ক'দিন মণ্ডপেও থাকবেন এই 'জীবন্ত দেবদেবী'রা। এই লোকশিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই পুরনো দিনে গ্রামবাংলায় পালাগানের উঠোনের আদলে মণ্ডপের পাশেও একটি উঠোন থাকবে। সেখানে চলবে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ পালা। মণ্ডপে পুজো পাবেন মৃণ্ময়ী দুর্গা। পাশাপাশি থাকবেন জীবন্ত দুর্গারূপী বহুরূপীও।
এই পুজোর শিল্পী অনির্বাণ দাস আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “এই প্রান্তিক শিল্পের মূল পৃষ্ঠপোষক ছিল বর্ধিষ্ণু জমিদার বাড়িগুলি। তাদের জৌলুস কমে গেলে এই শিল্পও কোণঠাসা হয়ে পড়ে, যা এখন কোনও রকমে গ্রামেগঞ্জে টিকে আছে। মালদহ, শান্তিপুর থেকে ৮০ জনের দল আসছেন, যাঁরা এখানে সাজবেন এবং পারফর্ম করবেন।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।