মল্লিক বাড়ির দুর্গা প্রতিমা
কলকাতার ক্লাবের পুজোর সঙ্গে সঙ্গে সাবেকি পুজোগুলিরও এক আলাদাই তাৎপর্য রয়েছে। কলকাতার পুরনো সাবেকি পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো। আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই দুর্গাপুজো যা আজও তার সাবেকি রীতিনীতি মেনে হয়ে আসছে প্রতিবছর।
সর্বপ্রথম স্বর্গীয় অমিতা পালের (বিবাহের পর মল্লিক) পরিবারের হাত ধরে এই পুজো শুরু হলেও ২০১৩ সালে বিশেষ স্বপ্নাদেশ পেয়ে মল্লিক পরিবারের সদস্যরাই এই পুজোর পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে মল্লিক পরিবারে প্রবীণ সদ্যসরাই এই পুজোর রীতিনীতি বহন করে নিয়ে চলেছেন।
দুর্গা প্রতিমা
এক কথায় বলতে গেলে জন্মাষ্টমীর দিন থেকেই এই বাড়ির পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। কারণ প্রতি বছর এই দিনেই কাঠামো পুজোর মাধ্যমে পুজো শুরু হয়। আরও কিছু বিশেষ রীতি মেনে এখানে পুজো শুরু হয়। প্রতিমা তৈরি হয় কুমোরের বাড়িতেই। সেখান থেকে চতুর্দোলা করে প্রতিমা নিয়ে এসে মল্লিকবাড়ির পুজো মণ্ডপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ হল দেবী এখানে আসেন তাঁর দুই সখী 'জয়া' এবং 'বিজয়া' এর সঙ্গে। ষষ্ঠিতে মায়ের বোধন করা হয়, আর সপ্তমীর ভোরে সূর্যোদয়ের আগে নবপত্রিকা স্নান করিয়ে ঘট স্থাপনের মাধ্যমে মায়ের বিশেষ পুজোর শুরু হয়।
এখানে মাকে অন্ন ভোগ দেওয়া হয় না। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত দেওয়া হয় লুচি ভোগ। অষ্টমীর দিন ১০৮টি পদ্ম দিয়ে মায়ের পুজো, হোম যজ্ঞ এবং কুমারী পুজোও করা হয়। সন্ধিপুজোর সময় ১০৮টি প্রদীপ ও ১০৮টি পদ্ম দিয়ে মায়ের চন্ডি রূপের পুজো করা হয়। আর নবমীতে হয় মহাযজ্ঞ। ১০৮টি বেলপাতা ও নারকেল দিয়ে মায়ের মহাযজ্ঞ সম্পন্ন করা হয়।
দশমীর দিন মায়ের দশমীর পুজো সম্পন্ন করে মায়ের হলুদ জলে মুখ দেখা হয় এবং পরিবারের সবাই সেই দিন মাছ-ভোগ গ্রহণ করেন এবং মায়ের কৈলাশ যাত্রার প্রস্তুতি শুরু করেন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।