শারদ উৎসবের বেশ কিছুদিন আগে থেকে ছটপুজো পর্যন্ত তাঁদের তৈরি বাঁশের ঝুড়ি, কুলো, সাজির ভাল চাহিদা থাকে। বরাতও মেলে। এবার করোনা-পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত বরাতই মেলেনি বলে জানান এই কাজে যুক্ত কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের ডাঙাল গ্রামের মাহালিপাড়ার প্রায় ৬০টি পরিবারের কারিগরেরা।
ওই কারিগরেরা জানান, তাঁরা সকলেই বর্ষাবাদে বছর ভর বাঁশের এসব সামগ্রী তৈরি করেন। পুজো-সহ নানা উৎসবে তাঁদের তৈরি বিভিন্ন মাপের ঝুড়ি, কুলো, ফুলের সাজির চাহিদা থাকে। আনন্দ মাহালি নামে এক কারিগর বলেন, ‘‘মহাজনেরা এসে বরাত দিয়ে যান। সেই মতোই জিনিস তৈরি হয়। আবার অনেক সময়ে আমরা নিজেদের মতো করেও এ সব তৈরি করি। প্রায় সবই বিক্রি হয়ে যেত এত দিন। পুজোর সময়ে চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এবার একজন মহাজনও আসেননি।’’ কয়েকজন কারিগর নিজেদের সামগ্রী স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে ভাল দাম পাননি বলেও জানিয়েছেন।
পুজো-সহ নানা উৎসবে তাঁদের তৈরি বিভিন্ন মাপের ঝুড়ি, কুলো, ফুলের সাজির চাহিদা থাকে।
এই কাজে যুক্ত মানুষজন জানিয়েছেন, এবছর মার্চের শেষ থেকে ‘লকডাউন’ হয়েছিল। বছরের এই সময়টায় বিভিন্ন গ্রামে গাজন, মনসা পুজোর মতো নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। সেই সব পুজোতেও চাহিদা থাকে বাঁশের তৈরি ঝুড়ি, সাজির। এ বার লক ডাউনের জেরে বেশির ভাগ গ্রামেই এসব কিছু হয়নি। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে বাজার ও বন্ধছিল। কোনও মহাজনও আসেননি। ফলে, তৈরি করা জিনিস পত্র বাড়িতেই পড়ে নষ্ট হয়েছ বলে কারিগরদের অভিযোগ। পুজোর আগেও হাল ফেরেনি বলে জানান তাঁরা।
আরও পড়ুন: স্লগ ওভারে ব্যাটে রান, খুশি কুমোরটুলি
আরও পড়ুন: সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে থিম সং ‘বদ্রীনাথ’
সুমিত্রা মাহালি নামে এক কারিগর বলেন, ‘‘গত বছর পুজোয় আমরা প্রায় একশোটি ঝুড়ি তৈরির বরাত পেয়েছিলাম। এবছর কার্যত কিছুই নেই।’’ একই কথা জানালেন শিবলাল মুর্মু নামে অন্য এক কারিগরও। তিনি বলেন, ‘‘কোনও রকম সরকারি সাহায্য আমরা পাচ্ছিনা। বহু বছর আগে বাম আমলে একবার মিলেছিল। প্রশাসন এ বার আমাদের কথা ভাবলে সুবিধা হয়।’’ বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই সমস্যার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’