হাওড়ার রামরাজাতলায় ধারসা ভ্রাতৃসঙ্ঘ সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মন খারাপ! বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার রূপ এদের ক্ষ্ট দেয়। কোনও রাখঢাকও করছেন না সে কথা বলতে এই পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শান্তনু সরকার আনন্দবাজার অনলাইন-কে।
বলছেন, ‘‘চারদিকের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা যেহেতু মনে কষ্ট দেয়, সে কারণে সেটাই এ বার আমাদের পুজোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছি। এখন দরকার শান্তি। সেই শান্তির বার্তা আমাদের এবারের পুজোর ভাবনায় থাকছে।"
এঁদের পুজোর এবার ৫০তম বর্ষ। রজত জয়ন্তী বর্ষে পুজোর থিম অর্থাৎ ভাবনার শিরোনাম ‘মহাশূন্যে মেঘবালিকা’। যে ভাবনা এঁদের থিম শিল্পী চিরঞ্জীব সাহারই। পুজো প্যান্ডেলের থেকে ৫-৭ কিলোমিটারের ভিতরেই থাকেন। আর প্রতিমা শিল্পী প্রসন মন্ডল তো রামরাজাতলার স্থানীয় মানুষই।
আসলে 'মেঘবালিকা' থিম শুধু মন্ডপ কেন্দ্রিক নয়, বরং মন্ডপ সজ্জা এবং মায়ের মূর্তির সুন্দর মিশ্রণ। শরতের নীল আকাশে সাদা ধবধবে পেঁজা তুলোর মতো মেঘের লুকোচুরির এক আবহ গোটা মন্ডপ জুড়ে গড়ে উঠছে। যা দেখে দর্শনার্থীদের মনে হবে, মহাশূন্যের সেই চরাচরব্যাপী আকাশের মেঘের মধ্যেকার স্বর্গ থেকে মেঘবালিকা রূপী মা দুর্গার মর্ত্যে আগমন ঘটছে।
মেঘবালিকা-ই এখানে মা দুর্গা। যাঁর মুখশ্রী বিখ্যাত রাজরাজেশ্বরী মন্দিরের মায়ের আদলে। সিংহবাহিনী নন। পদ্ম ফুলের উপর বসা। বাহন সিংহ একটু দূরে দাঁড়িয়ে এবং হিংস্র রূপীও নয়। মায়ের হাতে কোনও অস্ত্র নেই। অসুরও মনুষ্যরূপী নয়। পুরোপুরি মহিষরূপী। যে কিনা মেঘবালিকা রূপী মা দুর্গার কাছে নিরস্ত্র অবস্থায় ক্ষমা ভিক্ষা চাইছে। অস্ত্রহীন মেঘবালিকা দুর্গাও শান্তির প্রতীক হিসেবে যেন সমাজকে বার্তা দিচ্ছেন, যুদ্ধে নয়, অসুরকেও নির্বিষ করা হোক শান্তিবার্তার মাধ্যমে!
কীভাবে যাবেন : হাওড়া থেকে রামরাজাতলা রেল স্টেশনে নেমে মিনিট পাঁচেক হেঁটে মহি আলি রোডে ঢুকলেই এই দুর্গাপুজো।
ভাবনা : মহাশূন্যে মেঘবালিকা
ভাবনায় : চিরঞ্জীব সাহা
প্রতিমা শিল্পী : প্রসন মন্ডল
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।