দশভুজা মানেই মা দুর্গাকে বোঝায়। কিন্তু দশভুজা কালীর কথা শুনেছেন কখনও?
শুধু ১০ হাতই নয়, আছে তার ১০টি মাথা এবং ১০টি পা। শাস্ত্রে বর্ণিত মহাকালীর রূপ এই দেবী।
মালদার ইংরেজবাজার এলাকায় বছরের পর বছর মহাকালীরই পুজো হয়ে আসছে। জেনে নেওয়া যাক সেই গল্প।
ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির পুজো এই কালীপুজো কিন্তু অমাবস্যা তিথিতে হয় না। আবার রাতেও হয় না। এই পুজো হয় দুপুর বেলায় চতুর্দশী তিথিতে।
আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল দেবীর পায়ের কাছে মহাদেব শায়িত অবস্থায় নেই। আছে দুই অসুর।
দেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক আগে ১৯৩০ সালে মালদার পুড়াটুলি এলাকার কিছু যুবক বাকি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মতোই চেয়েছিল দেশকে স্বাধীন করতে।
সেই স্বপ্ন মনে নিয়েই নিজেদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে শক্তিশালী করতে খোলেন একটি ব্যায়ামাগার। নাম দেন ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতি।
এর পরে দেশকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যেই তাঁরা এই কালীপুজো শুরু করেন। ভারতীয়দের উপর ব্রিটিশদের অত্যাচারের প্রতীকস্বরূপ ব্রিটিশদেরকে অসুর হিসাবে দেবীর পায়ের কাছে রাখা হয়।
স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ শাসিত সমাজে রাতে কাউকে দেখলেই ইংরেজরা দেশীয়দের উপর অত্যাচার চালাতো। তাই রাতের বদলে দিনের আলোতেই পুড়াটুলির যুবকরা এই পুজো শুরু করেন।
অমাবস্যার রাতে ইংরেজরা পুজো করতে না দেওয়ায় চতুর্দশীতেই তাঁরা পুজো করেছিলেন।
কথিত, মালদা থেকে কিছু দূরে বিহারের বিন্দুবাসিনী পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা মহাকালীর মূর্তি দেখেই এই পুজো শুরু করা হয়।
পরে তারা জানতে পারেন পুরাণের শ্রী শ্রী চণ্ডী গ্রন্থের বৈকৃতিক রহস্য সূত্রে এই মূর্তির কথা বলা রয়েছে।
আগে এই পুজো পুড়াটুলি এবং অন্যান্য কয়েক জায়গায় হলেও ১৯৮৫ সাল থেকে শহরের গঙ্গাবাগ এলাকায় পাকাপাকিভাবে এই পুজো শুরু হয়। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।