মা কালী হিন্দু ধর্মে আদ্যা শক্তি রূপে পূজিতা। তিনি শক্তির রূপ, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি, সংরক্ষণ ও ধ্বংসের শক্তি। তাঁর হাতে খড়গ, তিনি ত্রিনয়ন-শোভিতা। তিনি মাতৃশক্তির রূপ, অন্ধকারে আলোর জ্যোতি। তিনি একাধারে দুষ্টদের ভয়, ভক্তদের শরণ।
আদ্যাশক্তি মহামায়া কালিকা রূপে আবির্ভূতা হন শ্মশানে। আর শ্মশান মানেই শৃগালের বাস। তাই, দেবী চণ্ডিকা রূপে যখন প্রথম আবির্ভূতা হন, সেখানে তিনি শৃগাল-পরিবৃতা। আবার, মায়ের খড়্গ মানুষকে বোধ দান করে। খড়্গে আঁকা চোখ অজ্ঞানতার অন্ধকার নাশ করে। তাই, বুদ্ধিমানতম প্রাণী শৃগাল হল মায়ের বাহন।
আদ্যাশক্তি মহামায়া কালিকা রূপে আবির্ভূতা হন শ্মশানে। আর শ্মশান মানেই শৃগালের বাস। তাই, দেবী চণ্ডিকা রূপে যখন প্রথম আবির্ভূতা হন, সেখানে তিনি শৃগাল-পরিবৃতা। আবার, মায়ের খড়্গ মানুষকে বোধ দান করে। খড়্গে আঁকা চোখ অজ্ঞানতার অন্ধকার নাশ করে। তাই, বুদ্ধিমানতম প্রাণী শৃগাল হল মায়ের বাহন।
তেমনই, অনেক পুরাণকাহিনী ও প্রত্নলিপিতে ‘কোকামুখা’, বা ‘কোকমুখা’ নাম পাওয়া গেছে মহাকালীর। কোক মানে নেকড়ে বাঘ বা শিয়াল। অর্থাৎ, হিন্দু পুরাণ মতে, শৃগাল কিন্তু কেবল বাহনই নয়, দেবীর রূপভেদও বটে। বহু প্রাচীন প্রত্নলিপিতত্ত্বে আমরা কোকমুখা দেবীর উল্লেখ পাই, যেখানে দেবী কোকমুখ, অর্থাৎ দেবী নিজেই শৃগাল বা নেকড়ের মুখধারণ করছেন। শ্মশানের ধ্বনি দিচ্ছেন। বহু স্থলে শ্মশান কালী মায়ের পূজার পূর্বে শিবা-ভোগ দেওয়া হয়, যেখানে শৃগালকে তুষ্ট করাই উপাচার।
দেবীর শৃগালরূপের উল্লেখ আছে হরিবংশ ও বিষ্ণুপুরাণ প্রভৃতি গ্রন্থে। এখানে বসুদেবকে যমুনার মধ্য দিয়ে গোকুলে যাওয়ার পথনির্দেশ করতে দেবী শৃগালরূপ ধারণ করেন।
বিষ্ণুকেও কোকমুখ বলা হয়েছে, সে কোকমুখ বিষ্ণুর স্মৃতি উগ্রমাধব বা নরসিংহ মূর্তির মধ্যে লুক্কায়িত থাকতে পারে। কোকমুখা মূর্তি বিলুপ্ত হলেও শিয়ালী-কালী কিছুদিন আগে পর্যন্তও পরিচিত ছিল।
এই প্রসঙ্গে রাঢ়দেশে কাটোয়া অঞ্চলে অট্টহাস গ্রামে ফুল্লরা দেবীর কথা বলা যায়, যেখানে দেবীর পুজো করতে গেলে শিবাভোগ দেওয়া হয়।
শিবাভোগ মানে শিয়ালদেরকে সপরিবার-মাতৃকাজ্ঞানে পুজোর প্রসাদী ভোগ খাওয়ানো হয়। তারপরেই সম্পন্ন হয় দেবী পূজা। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।