ব্রিটিশ সরকারের বঙ্গভঙ্গের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সারা বাংলা তখন উত্তাল। এর প্রতিরোধে প্রথমেই যে সাংগঠনিক শক্তি জোরদার করা দরকার, সে কথা উপলব্ধি করেছিলেন হাওড়া জেলার আমতার স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষত সে দিন ছাত্র ও যুবসমাজকে সংঘবদ্ধ করতে তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন পলাশপ্রিয়ার আরাধনাকে।
শতাব্দীপ্রাচীন সেই ইতিহাসের সাক্ষী আমতার সরস্বতী তলা। এলাকার ইতিহাস বলে, ১৯০৫ সালে আমতার দক্ষিণপাড়ায় আটটি পরী-সহ ডাকের সাজের সরস্বতী প্রতিমা এনে পুজো করা হয়েছিল। মাতৃ আরাধনা আর ভোগ তৈরির জন্য গড়া হয়েছিল মাটির একটি ঘর। ‘বাণী সঙ্ঘ’ নাম দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল একটি সংগঠনও।
সেই জায়গাই পরে সরস্বতী তলা নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬৬ সালে বন্যায় মাটির ঘর তথা মন্দিরটি ভেঙে গেলে ওই বছরই স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে তৈরি হয় পাথর বসানো পাকা ঠাকুরদালান।
আমতার এই মন্দিরটিতে দেবী সরস্বতীর প্রতিমার সঙ্গে বর্তমানে ৬টি পরী দেখা যায়। এগুলি ভারতমাতা, বঙ্গমাতা, দুই বেলপরী এবং জয়া ও বিজয়া নামে পরিচিত। প্রতি বছর সরস্বতী পুজো উপলক্ষে সেখানে তিন দিন ধরে চলে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। সর্বজনীন এই সরস্বতী পুজোয় জনসমাগম হয় দেখার মতো। আগে প্রতিমা বিসর্জনে যেত বাঁশের ডুলিতে। এখন তা করা হয় ট্রলির সাহায্যে।
অবস্থান/ কী ভাবে যাবেন: হাওড়ার আমতা। বাস যায় ধর্মতলা এবং কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।