হাওড়া পঞ্চাননতলার উমেশচন্দ্র দাস লেনের দাস বাড়ি
শ্বেত পাথরের মূর্তি। উচ্চতায় ফুট চারেক। সরস্বতী প্রতিমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস।
হাওড়া পঞ্চাননতলার উমেশচন্দ্র দাস লেনে দাস বাড়ির এই প্রাচীন সরস্বতী মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনি। ঠিক একশো বছর আগে ১৯২৩ সালে স্নান যাত্রার দিনে মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বিদ্যাদেবীর। প্রতি বছর তাই ওই দিনেই বাৎসরিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে।
শোনা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা উমেশচন্দ্র দাস বর্গি হানার আশঙ্কায় সপরিবারে চলে গিয়েছিলেন হুগলি জেলার বাঁশবেড়িয়ায়। পরে শিক্ষকতার পেশা সূত্রে হাওড়ার পঞ্চাননতলায় এসে বসবাস শুরু করেন। ১৮৫৬ থেকে ১৮৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন হাওড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেই সময়েই রাজস্থানের জয়পুর থেকে সরস্বতীর একটি মূর্তি আনিয়ে বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য বিরূপ। মনোবাসনাকে বাস্তবায়িত করার আগেই প্রয়াত হন উমেশচন্দ্র। পিতার ইচ্ছা পূরণ করেন তাঁর এক পুত্র। রাজস্থান থেকে দেবী সরস্বতীর প্রতিমা আনিয়ে বাড়িতেই তাঁর পুজোর ব্যবস্থা করা হয়।
তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকাল ১৯১৯ সালে রাজস্থান থেকে দাস বাড়িতে আসে শ্বেতপাথরের সরস্বতী প্রতিমা। মন্দির তৈরি হয় পরে, ১৯২৩ সালে। মন্দিরের ফলকে লেখা আছে, এই পুজো প্রথমে বাড়িতেই শুরু হয়েছিল ১৯১৯ সালে।
হাঁসের উপর দাঁড়ানো চার ফুট দৈর্ঘ্যের শ্বেত পাথরের মূর্তির হাতে বীণা। দেবীর পুজো হয় প্রতিদিনই, তবে বিশেষ আয়োজন হয় মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীতে। সে দিন ফুলের মালা আর আলোয় সেজে ওঠে মন্দির। ১০৮টি মাটির খুড়িতে বড় বাতাসা আর ফল রাখা হয় দেবীর নৈবেদ্য হিসেবে। একশো বছর ধরে এই রীতিই চলে আসছে দাস বাড়ির সরস্বতী পুজোয়।
অবস্থান/ কীভাবে যাবেন: ধর্মতলা থেকে হাওড়ার পঞ্চানন তলা বাসস্ট্যান্ড। কাছেই দাস বাড়ি।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।