1500 year old Lakshmi Puja Birbhum

দেড় হাজার বছরের পুরনো লক্ষ্মীপুজো, তবু গ্রামে কেউ বাড়িতে দেবীর আরাধনাই করেন না!

এই গ্রামের লক্ষ্মীপুজো প্রায় ১৫০০ বছরের পুরনো! রাজা হর্ষবর্ধনের আমল থেকেই নাকি পালিত হয়ে আসছে এই বিখ্যাত পুজোটি।

Advertisement
 বীরভূম শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:১৩
Share:

ঘোষ গ্রামের লক্ষ্মী প্রতিমা

বাংলার এখানে ওখানে ছড়িয়ে অজস্র প্রাচীন পুজো। যদি প্রশ্ন করা হয়, কত বছরের পুরনো পুজো দেখেছেন? উত্তর আসবে, বড়জোর ৭০০ বছরের পুরনো। কিন্তু কখনও শুনেছেন দেড় হাজার বছরের পুরনো পুজোর কথা? সেই পুজো কিন্তু এখনও হয় বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের ঘোষ গ্রামে। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি। এই গ্রামের লক্ষ্মীপুজো প্রায় ১৫০০ বছরের পুরনো! রাজা হর্ষবর্ধনের আমল থেকেই নাকি পালিত হয়ে আসছে এই বিখ্যাত পুজোটি।

Advertisement

আরও অবাক করা বিষয়, এই গ্রামের কোনও বাড়িতেই লক্ষ্মীপুজোর দিনে আলাদা করে বাড়িতে দেবীর আরাধনা হয় না। গ্রামের একটি মন্দিরেই পুজো দেওয়ার জন্য ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। শোনা যায়, স্বপ্নাদেশ পেয়ে সাধক কামদেব ব্রহ্মচারী এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। তাঁকে সহায়তা করেছিলেন এ গ্রামেরই কৃষক সজল ঘোষ।

ঘোষ গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, এক সময়ে সাধক কামদেব ব্রহ্মচর্য সাধনার আসন খুঁজতে খুঁজতে এসে পৌঁছন বীরভূমের একচক্রধাম বীরচন্দ্রপুরে। তখন ভারী বর্ষা, সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে তিনি এই স্থানে পৌঁছন এবং ক্লান্ত হয়ে এক নিম গাছের নীচে বসে ঘুমিয়ে পড়েন। কথিত, এই গাছের তলাতেই তিনি পরবর্তীকালে সাধনা শুরু করেন। দীর্ঘদিন কঠোর সাধনা পেরিয়ে তিনি দেবী লক্ষ্মীর স্বপ্নাদেশ পান। দেবী তাঁকে এই স্থানেই পুজো করে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করার আদেশ দেন।

Advertisement

এর পরে কোনও এক কোজাগরী পূর্ণিমা তিথিতে গ্রামের কৃষক সজল ঘোষের সহায়তায় গ্রামের পুকুর থেকে শ্বেতপদ্ম ও ভাসমান কাঠখণ্ড তুলে নিয়ে আসেন সাধক কামদেব। কাঠটিতে ভাল করে গঙ্গা মাটি মাখিয়ে প্রতিমার আকার দিয়ে তাতেই দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। শোনা যায়, সেই সময় থেকেই গ্রামের কোনও বাড়িতে আর আলাদা করে লক্ষ্মীপুজো হয় না।

পরবর্তীকালে কান্দির রাজা খবর পেয়ে এই গ্রামে এসে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। লক্ষ্মীপুজোর দিনে সেই মন্দিরে আজও বহু ভক্তের আগমন হয় পুজো দেওয়ার জন্য। এখানে ৯টি ঘটে জল ভরে নবঘটের পুজো করা হয়। তা ছাড়াও ১০৮টি ক্ষীরের নাড়ুর নৈবেদ্য দেওয়া হয় দেবীর কাছে।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement