প্রতীকী ছবি
উৎসবের মরসুমে বাজার করতে গিয়ে ছ্যাঁকা খাওয়ার জোগাড় উৎসবপ্রিয় বাঙালির। পুজোর আগে বৃষ্টির কারণে এ বছরও সব্জি এবং ফলের বাজার অগ্নিমূল্য। সেই রেশ রয়েছে লক্ষ্মীপুজোতেও। কলকাতার একাধিক জনপ্রিয় বাজারে সব্জি-ফলের দাম আকাশছোঁয়া। লক্ষ্মী পুজোর বাজার করতে বেরনোর আগে এক ঝলকে দেখে নিন কোন জিনিসের কত দাম।
লক্ষ্মী প্রতিমা: করোনা কালে গত বছর সে ভাবে ব্যবসা হয়নি প্রতিমা বিক্রেতাদের। এ বছর লাভের আশায় প্রতিমা বিক্রেতারা। কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন বাজারে মাঝারি সাইজের লক্ষ্মী প্রতিমা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। একটু ছোট সাইজের লক্ষ্মী প্রতিমার দাম ৯০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। একটু বড় সাইজের প্রতিমা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। বাজারে লক্ষ্মীর বড় সরার দাম প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। লক্ষ্মীর ছোট সরার দাম ৬০ থেকে ৯০ টাকার আশপাশে। ডাকের সাজের প্রতিমার দাম ৮০০ টাকা থেকে শুরু। অন্য দিকে বারোয়ারি পুজোর প্রতিমার দাম শুরুই হচ্ছে ১,৫০০ টাকা থেকে।
নাড়ু: বেশ কয়েক বছর যাবৎ লক্ষ্মীপুজোয় বাড়িতে নাড়ু বানানোর চল প্রায় উঠেই গিয়েছে। বদলে, বাজার থেকে নারকেল ও তিলের নাড়ু, মুড়ি ও খইয়ের মোয়ার প্যাকেট কেনেন অনেকেই। দাম বেশি হলেও রেডিমেড নাড়ুর বিক্রি অনেকটাই বেড়েছে। ফলে, দাম চড়েছে প্যাকেটবন্দি নাড়ু, মোয়ার। এক পিস নারকেল নাড়ু বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫ থেকে ৮ টাকার দামে।
মিষ্টি: মিষ্টি ছাড়া যে কোনও পুজোই অসম্পূর্ণ। লক্ষ্মী পুজোতে সেখানেও হাত ছোঁয়াতে গেলে ছ্যাঁকা খাচ্ছে মধ্যবিত্ত বাঙালি। সন্দেশের দাম শুরুই হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা প্রতি পিস। মিষ্টি দই ২২০ টাকা কিলো। টক দই ১৮০-২০০ টাকা।
প্রতীকী ছবি
ফুল ও মালা: রজনীগন্ধা থেকে শুরু করে গাঁদার মালা বিকোচ্ছে চড়া দামেই। বাজারে মাঝারি সাইজের রজনীগন্ধা মালা ৬০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে, একটু বড় মালা ১৫০ টাকা। প্রমাণ সাইজের জোড়া গাঁদাফুলের মালা ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এক পিস মাঝারি মানের পদ্মের দাম ২৫ টাকা। ভাল পদ্ম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা প্রতি পিস।
সব্জি: আলু (চন্দ্রমুখী) ৪০-৪৫ টাকা, জ্যোতি আলু ২৮-৩০ টাকা প্রতি কিলো টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, কুমড়ো ৪০ টাকা। ফুলকপি জোড়া (ছোট) ৫০ টাকা, ফুলকপি জোড়া (বড়) ১০০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৩০ টাকা কিলো, ঝিঙে ৬০ টাকা কেজি, শসা ৪০ টাকা, পাতি লেবু ৩ থেকে ৫ টাকা প্রতি পিস, আদা ২২০ টাকা কেজি, লঙ্কা কেজি ১২০ টাকা, সিম ১০০ টাকা, বিনস ১২০ টাকা।
ফল: আপেল ১০০ টাকা কেজি। কমলালেবু এবং মুসম্বি লেবু প্রতিটি ২০ টাকা করে। ন্যাসপাতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা প্রতি কেজি, পেয়ারা ১২০-১৪০ টাকা করে কিলো। আঙুর ২৪০ টাকা। বেদানা ১৮০ টাকা, পানিফল ১০০ টাকা, মর্তমান কলা ১ ডজন ৬৫ টাকা, কাঁঠালি কলা ১ ডজন ৪০ টাকা। আবার এক পিস নারকেলের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
মাছ: মাছের বাজারও অগ্নিমূল্য। রুই প্রতি কিলো ১৮০ টাকা (গোটা), রুই প্রতি কেজি ৩০০ টাকা (কাটা), কাতলা প্রতি কিলো ২০০-২২০ টাকা (গোটা) কাতলা প্রতি কিলো ৩৫০-৪০০ টাকা (কাটা), ভেটকি প্রতি কিলো ৬০০ টাকা, ইলিশ (১কেজি) ১২০০-১৫০০ টাকা কিলো, তেলাপিয়া প্রতি কিলো ১৮০-২০০ টাকা, ভোলা প্রতি কিলো ২০০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০-৪৫০ টাকা কিলো, মৌরোলা ৩০০ টাকা কিলো।
দাম যতই হোক আগুনছোঁয়া, বাজার করতে কালঘাম ছুটুক, বাঙালি তবু অকুতোভয়। লক্ষ্মীপুজোয় আয়োজন হবে না, তা-ও কি হয়?
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের অংশ।