লক্ষ্মী পুজোয় লাল মেঝেতে খড়িমাটি বা চালের গুঁড়োর শ্বেতশুভ্র আলপনার চল অতি প্রাচীন।
যদিও বর্তমান সময়ে খড়িমাটি বা চালের গুঁড়ো দিয়ে আলপনা দেওয়ার চল উঠেই গিয়েছে। তার বদলে এসেছে রেডিমেড আলপনার রকমারি বিকল্প।
তবে যতই সময় বদলাক, এখনও অনেক বাড়িতেই লক্ষ্মী পুজো মানে আলপনার জাঁকজমক। তা-ও রেডিমেড নয়, খড়িমাটি বা চালের গুঁড়ো দিয়েই নানা নকশায় আহ্বান করা হয় মা লক্ষ্মীকে।
ঘরোয়া আয়োজনের পুজোতে বিশেষ কিছু আলপনা পুরনো সময় থেকেই রীতি নিয়ম অনুয়ায়ী চলে আসছে।
পেঁচা: লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা। শুভ কাজের প্রতীক হিসাবেও ধরা হয় পেঁচাকে। লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে তাই আলপনাতেও থাকে তার উপস্থিতি।
লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ: ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে।’ লক্ষ্মী পুজোর আরাধনায় এই প্রার্থনাই থাকে বাঙালির গৃহকোণে। যে চৌকাঠ পেরিয়ে মা লক্ষ্মী ঘরে আসবেন, তাতে তাঁর পায়ের প্রতীকী ছাপের আলপনা দেওয়া হয়। সাধারণত, ইংরেজি শব্দের এস অক্ষরের ধাঁচে হয় তার নকশা। উপরের দিকে পাঁচটি বিন্দু দিয়ে আঙুল বোঝানো হয়।
ধানের শিষ: লক্ষ্মী পুজোকে বলা হয় কোজাগরী পুজো। কোজাগরী কথার অর্থ ‘কে জাগে রে?’ প্রচলিত বিশ্বাস বলে, যে জেগে থাকবে, তার ঘরে মা লক্ষ্মী আসবেন পায়ে হেঁটে এবং ধান ছড়িয়ে যাবেন। তাই লক্ষ্মী পুজোয় পায়ের ছাপ আঁকার সঙ্গে ধানের নকশাও রাখা হয়।
মাছ: অনেক বাড়িতেই পুজোর দিন মা লক্ষ্মীকে ইলিশ মাছ উৎসর্গ করা হয়। যার প্রতিফলন দেখা যায় আলপনাতেও। পুজোতে মাছ উৎসর্গ করা হলে আলপনাতেও সেই নকশার আঁকার দেওয়া হয়।
পদ্ম ফুল: লক্ষ্মীপুজোয় পদ্মফুল থাকেই। বেশির ভাগ বাড়িতেই লক্ষ্মীর ঘটের কাছে পদ্মফুলের সূক্ষ্ম নকশার আলপনা দিতে দেখা যায়।
শঙ্খ: লক্ষ্মীপুজোয় ঢাক-ঢোলের আড়ম্বর থাকে না। শুধুমাত্র শঙ্খ-পদ্ম-চক্র দিয়েই সারা হয় পুজো। তাই আলপনাতেও শঙ্খের প্রতীকী নকশা রাখা হয়।