সিনেমা দেখার নেশা বাঙালি মাত্রেরই। শুধু বাঙালিই বা বলি কেন,সারা পৃথিবীতেই সিনেমা বা থিয়েটার হলগুলোয় ভিড় উপচে পরে।দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোতে তো প্রায় পাড়ায় পাড়ায় সিনেমা হল।মোটকথা সিনেমা নিয়ে সারা বছরই উৎসব চলে আমাদের দেশে।হলে গিয়ে সিনেমা দেখার আনন্দটাই যেন অন্যরকম।
তবে আপনার বাড়িতে বসেই সিনেমা হলের আনন্দ নেওয়া যায়।বানিয়ে ফেলা যায় ছোট্ট একটা সিনেমা হল কিংবা হোম থিয়েটার।যদিও আমরা এখন সাউন্ড সিস্টেমকেও হোম থিয়েটার বলি— কিন্তু তা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। কথা হচ্ছে এমন এক মিনি সিনেমা হল বা হোম থিয়েটারের, যেটা আপনার বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটে বসে সিনেমা দেখার এক নিশ্চিন্ত এবং আরামের জায়গা হয়ে উঠতে পারে।
তবে একথা ঠিক,ছোট ফ্ল্যাটে হোম থিয়েটার কিংবা মিনি সিনেমা হল বানানো একটু চাপের ব্যপার।কমপক্ষে একটা বড় আকারের ঘর চাই।যার এক দেওয়ালে থাকবে বেশ বড় মাপেরএলইডি টিভি কিংবা প্রোজেক্টরের পর্দা।শব্দের ভারসাম্য ছড়িয়ে থাকবে ঘরে।চারপাশে বসবে সাউন্ড বক্স।গমগম করবে আওয়াজে।এলইডি টিভি থাকলে একটা সুবিধা আছে, ত্রিমাত্রিক বা থ্রি ডি সিনেমাগুলো ঘরে বসেই দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: ছাদে বাগান করছেন? এ সব নিয়ম মানছেন কি?
বাড়ির মিনি সিনেমা হল কিংবা হোম থিয়েটারে বসার জায়গাটা আরামদায়ক হওয়া চাই।সিনেমা হলের মতো ওরকম চেয়ার নয়।ভাল হয় সোফা যদি রাখা যায় ঘরে।একটা সারিতেই যদি বসার ব্যবস্থা করতে হয়, তাহলে খান দুই এল টাইপ সোফাই ঠিক আছে।এমনও হতে পারে যে মেঝের উপরে স্রেফ গদি পেতে বসার ব্যবস্থা করলেন।তবে সেক্ষেত্রে এলইডি টিভিটা মেঝে থেকে খুব কম উচ্চতায় দেওয়ালে রাখতে হবে।যাতে আই লেভেলের উপরে উঠে না যায়।
বাড়িতে যদি একটা মোটামুটি দু’শো,আড়াইশো বর্গফুটের অতিরিক্ত ঘর থাকে,তাহলেই হয়ে যেতে পারে।বড় হলে তো কোনও কথাই নেই।ঘরের মাপ অনুযায়ী এলইডি টিভির মাপটা হবে।খুব বেশি আসবাবপত্রের ভিড় বাড়াবেন না এই ঘরে।
সাউন্ড প্রুফ করে নেওয়াটা একান্তই দরকার।না হলে বাইরের আওয়াজের সঙ্গে মিশে সিনেমা হলের মজাটা সেভাবে আর পাবেন না।জানলাগুলোস্লাইডিং পদ্ধতির হলেই ভাল।জানালার চারপাশটা প্যাডিং করে দিতে হবে।নিদেনপক্ষে সিলিকন দিয়ে ছোটখাটো ফাঁকফোকরগুলো ভরাট করে দিলেও হবে।জানালায় অবশ্যই ভারী পর্দা লাগাতে হবে।ফলস সিলিং করে নেওয়াটা খুব দরকার।এতে ঘরের উচ্চতা কিছুটা কমে,আর সাউন্ড প্রুফেরও কাজ করে।ফলস সিলিংয়ে থার্মোকল একটা লেয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।সাউন্ড প্রুফের জন্য থার্মোকল খুব পরিচিত উপাদান।
ছোট্ট একটা লাইব্রেরির মতো করা যেতে পারে এই ঘরকে। মানে স্টাডি কাম রেস্ট রুম হয়ে উঠতে পারে এমন ঘর, যেখানে বিরামের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকবে।
আরও পড়ুন: বাথটাবের শখ আছে? দেখে নিন কী ভাবে পূরণ হবে তা
মনে রাখবেন, এই ঘরের আলো যেন খুব একটা উজ্জ্বল না হয়।ফলস সিলিং ব্যবহার করলে আলোগুলোর উৎসকে লুকিয়ে রাখতে হবে। দেওয়ালকেও হতে হবে পুরু। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনও ভাবে যেন চোখের ক্ষতি না হয়। তাই স্ক্রিনের আলোকে এমন ভাবে সেট করান, যাতে তা চোখের জন্য ক্ষতিকারক না হয়।