জেনে নিন কোন কোন ঘরে কাঠের মেঝে বসালে দেখতে বেশ ভাল দেখাবে।
শৌখিনতার অন্যতম ভাবনা কাঠের মেঝে।একটা সময় কাঠের মেঝে ‘স্টেটাস সিম্বল’ ছিল।রাজরাজাদের দরবারে, সিঁড়িতে কাঠের মেঝে ব্যবহার করা হত।হাজারদুয়ারী রাজপ্রাসাদে যদি গিয়ে থাকেন তাহলে কাঠের মেঝে দেখতে পাবেন।যদিও সেই মেঝে আর আজকালকার কাঠের মেঝের মধ্যে অনেকটাই ফারাক।
সেসময়ের কাঠের মেঝের উপর যেমন কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হত,এখনকার মেঝে বাইরে থেকে দেখতেই বেশ সুন্দর।তৈরি হওয়া সাধারণ সমতল মেঝে,মার্বেল বা মোজাইক— যে কোনও মেঝের উপরে কাঠের মেঝে লাগিয়ে দেওয়া যায় সহজেই।এখন দেখার, কাঠের মেঝে কোন কোন ঘরে বসালে দেখতে বেশ ভাল দেখাবে।
সাধারণত বসার ঘরে কাঠের মেঝে লাগানো হয়।কাঠের মেঝেই এই ঘরকে বাকি ঘরগুলোর থেকে অনেকটাই আলাদা করে দেয়।একটা বেশ আভিজাত্যের ছোঁয়াচ দেয়।বসার ঘরে কাঠের মেঝে লাগালে বসার জায়গার মেঝেটাকে ইঞ্চি চার মতো উঁচু করে প্লাটফর্ম বানিয়ে নিয়ে কাঠের মেঝে বানাতে পারেন।সলিড কাঠ দিয়ে মেঝে বানালে এটা জেনে রাখা ভাল,কাঠের টুকরোগুলোর উচ্চতা হাফ ইঞ্চি থেকে এক ইঞ্চির মতো হয়।সুতরাং আলাদা করে প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে কাঠের মেঝে লাগালে কাঠের মাপটাও মাথায় রাখবেন।ল্যামিনেটেড উডেন ফ্লোরিং স্টিপস বা প্রায় কাঠের মেঝের নকশায় দেখতে তিন মিলিমিটার পুরু রাবার ফ্লোরিং এই প্লাটফর্মের উপরে লাগান। প্লাস্টিকের বেস আর অ্যাডেসিভ দিয়ে লাগিয়ে দিলেই হবে।
আরও পড়ুন: জিনিসপত্র বেড়ে গিয়েছে? এমন নকশাদার কুলুঙ্গি বানিয়ে নিন
বসার ঘর বাদ দিয়ে শোওয়ার ঘরেও কাঠের মেঝে ব্যবহার করা যায়।তবে শোওয়ার ঘরের মুশকিল হল, একটা বড় খাট,ওয়ার্ডরোব থাকার কারণে মেঝের বেশিরভাগ অংশই ঢাকা পড়ে থাকে।ফলে এত খরচ করে শোওয়ার ঘরে মেঝে করলেও অনেকটা অংশ ঢাকা পড়ে থাকবে।সেক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হতে পারে ঢাকা অংশগুলো বাদ দিয়ে কাঠের মেঝে করা।
এছাড়াও বৈঠকখানার ঘর বা অতিথির থাকার ঘরে আমরা কাঠের মেঝে করতে পারি।কিংবা বাড়িতে কোনও ছোট স্টাডি রুমেও কাঠের মেঝে করে নেওয়া যায়।শীতকালে কাঠের মেঝে খুব আরামদায়কও হয়।
কাঠের মেঝে বসার ঘরে ব্যবহার করলে লক্ষ্য রাখবেন যেন ফার্নিচারের রঙের সঙ্গে কাঠের মেঝের রঙ এক না হয়ে যায়।হালকা রঙের মেঝে হলে গাঢ় রঙের আসবাব,আবার গাঢ় রঙের মেঝে হলে হালকা রঙের আসবাব— এটা যেন অবশ্যই হয়।
আরও পড়ুন: ঘরের নিরাপত্তার জন্য এ সব এখনও করেননি!
তবে কাঠের মেঝের কিছু কিছু অসুবিধাও আছে।যেমন কাঠের মেঝেতে জল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলার দরকার।নতুবা মেঝেতে একটা জলের দাগ থেকে যেতে পারে,আর খুব বেশি এমন হলে মেঝে নষ্টও হয়ে যেতে পারে।
কাঠের মেঝেতে কোনও আসবাব কিংবা সোফাসেট বা ভারী কিছু,অসাবধানে টানাটানি করলে মেঝেতে দাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। বাচ্চারা মেটালিক বা ধারালো কিছু দিয়ে খেলা করলেও কাঠের মেঝেতে দাগ পরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যদিও কার্পেট ব্যবহারের থেকে কাঠের মেঝে ব্যবহার ভাল।কার্পেটে নোংরা জমে থাকার সম্ভাবনা থাকে,কাঠের মেঝেতে সে সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তবে কোনও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে কখনও কাঠের মেঝে লাগাবেন না। এতে মেঝে নষ্ট হয়ে যেতে পারে সহজেই।
সুতরাং সব দিক বিবেচনা করে তবেই কাঠের মেঝে বাছুন।