দীপাবলি তো আর হাতে গোনা কয়েক দিনের অপেক্ষা। আলোর উৎসবে মেতে উঠতে তৈরি তো? অবশ্য প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়েই গিয়েছে নিশ্চয়ই। বাজারেও হাজির হরেক রকম বাজি।
গত বেশ কয়েক বছরে নিষিদ্ধ বাজি রুখতে পুলিশি ধরপাকড় কিছুটা হলেও সচেতনতা বাড়িয়েছে। তাই ক্রমেই চাহিদা বাড়ছে গ্রিন ক্র্যাকার বা সবুজ বাজির।
এই সবুজ বাজি আসলে কী? বেরিয়াম মোনোক্লোরাইড, বেরিয়াম নাইট্রেট ও বেরিয়াম ক্লোরেট– মূলত এই তিনটি রাসায়নিক পদার্থের কারণে বাড়ে বায়ুদূষণ এবং শব্দদূষণ। সাধারণ বাজিতে এই প্রকার বেরিয়াম যৌগের ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি।
সবুজ বাজি তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ। কারণ, এই বাজি পোড়ালে বাষ্প বেরিয়ে আসে। তাই খুব বেশি ছাই, ধুলো উৎপন্ন হয় না।
এমনকি এই বাজি ফাটানোর সময়েও যে শব্দ উৎপন্ন হয়, তার মাত্রা ১১০ থেকে ১২৫ ডেসিবেলের বেশি নয়। সুরক্ষার এই দিকটি বিবেচনা করেই বহু মানুষ এখন বেছে নিচ্ছেন সবুজ বাজি।
বাজারে সবুজ বাজির বৈচিত্রও নেহাত কম নয়। সেখানে ঢুঁ মারার আগে তাই জেনে নিন কী কী ধরনের সবুজ বাজি পাবেন।
স্টার (সেফ থার্মাইট ক্র্যাকার): অন্যান্য সাধারণ বাজির মতো এই বাজিতে সালফার থাকে না। ফলে খুব সামান্য কণা নির্গত হয় এবং শব্দের তীব্রতাও অন্যান্য বাজির তুলনায় অনেকটাই কম।
সফল: অন্যান্য বাজিতে খুব বেশি মাত্রায় অ্যালুমিনিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এখানেই পার্থক্য সফল বাজির। এতে শব্দদূষণের মাত্রা তুলনামূলক কম হয়।
সোয়াস (সেফ ওয়াটার রিলিজার): নাম শুনেই কিছুটা আঁচ করতে পারছেন, এই বাজি ফাটালে জলীয় বাষ্প নির্গত হয়। ফলে ৩০ শতাংশ কম ধূলিকণা বাতাসে মেশে। ‘স্টার’-এর মতো এতেও সালফার বা পটাশিয়াম নাইট্রেট থাকে না।
সবুজ ক্র্যাকারের তিনটি ব্র্যান্ডই বর্তমানে শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রস্তুতকারকদের দ্বারা তৈরি হতে পারে, যা সিএসআইআর-এর অনুমোদনপ্রাপ্ত।
উপরন্তু, পিইএসও বা পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস্ সেফটি অর্গানাইজেশন-কেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এটি যাচাই করার জন্য। বাজিগুলি তৈরি করার সময়ে কোনও রকম আর্সেনিক, পারদ এবং বেরিয়াম যৌগ ব্যবহার করা হয় না এবং একটি নির্দিষ্ট সীমার পর তা আর শব্দ উৎপন্ন করে না– এ বিষয়টি নিশ্চিত করে তারা।
কিন্তু বাজারে এত রকম বাজির মধ্যে আপনি চিনবেন কী ভাবে কোনটি সবুজ বাজি? সবুজ বাজির প্যাকেটের উপরে সবুজ রঙের লোগো থাকে। সেই সঙ্গে ‘নিরি’ (ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-র কিউআর কোড। কেনার আগে অবশ্যই ভাল করে দেখে নিন। ভুয়োর ফাঁদে পা দেবেন না যেন! এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।