বাঙালির হেঁসেলে ইলিশ-চিংড়ির বিবাদ আর চপ-কাটলেট নিয়ে চর্চা ছাড়া যদি স্বাদে-আহ্লাদে কিছু থাকে, তা হল কষা মাংস! সবার ওপরে আসবে। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে বিখ্যাত, কলকাতার কম আঁচে রাঁধা বিশেষ ধরনের এই পদ---- কষা মাংস।
কলকাতায় এসে এই কষা মাংসের স্বাদ একবার না চেখে দেখলে জীবনই বৃথা। তাই আপনার জন্য 'আনন্দবাজার অনলাইন' হদিস দিল এবার পুজোর সময় ঢুঁ মারার জন্য বেশ কিছু সেরকম দোকানের।
গোলবাড়ি, শ্যামবাজার: নিন্দুকেরা কানাঘুষো যাই বলুক, কষা মাংসের সন্ধানে বেরোলে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সবাই এক কথায় এখনও বলবে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ের এই দোকান--- গোলবাড়ি-র কষা মাংসের ঠিকানা। প্রায় একশো বছরব্যাপী কষা মাংসের এই অনবদ্য জনপ্রিয়তায় লুকিয়ে রয়েছে অল্প আঁচে রাঁধা বিশেষ ধরনের এই পদে।
আমিনিয়া, নানা শাখা: কলকাতার বুকে মোগলাই রান্নার নামজাদা ঠিকানা হল আমিনিয়া। ধর্মতলা থেকে শোভাবাজার, গোলপার্ক কলকাতার নানা জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে এদের দোকানের অনেক শাখা। কাবাব, বিরিয়ানির পাশাপাশি শুদ্ধ বাঙালি কষা মাংসের জন্যও খুব বিখ্যাত এই দোকান।
আরসালান, নানা শাখা: আমিনিয়ার মতোই কলকাতার বুকে মোগলাইয়ের ঠিকানা হিসেবে বিশেষ ভাবে পরিচিত আরসালান। ভাত কিংবা রুটি, দুয়ের সঙ্গেই জমে যায় এই দোকানের কষা মাংস। একটু ঝাল বা মশলা দেওয়া হলেও বাঙালির পছন্দের এই পদ কিন্তু বেশ নামকরা।
রয়্যাল ইন্ডিয়ান হোটেল, বড়বাজার: খাস বড়বাজারের রাস্তার পাশেই বহু পুরনো রয়্যাল ইন্ডিয়ান হোটেলে গেলেই মিলবে বাঙালির প্রিয় রসেকষে বানানো কষা মাংস। বাঙালি খাদ্যরসিকদের মধ্যে বেশ নাম রয়েছে মধ্য কলকাতার কষা মাংসের এই ঠিকানার।
ভজহরি মান্না, সাতগাছি: গোলবাড়ির মতোই সমান জনপ্রিয় আর কোনও দোকান যদি কলকাতার বুকে থেকে থাকে তাহলে সেটা যশোর রোডের ধারে, শ্যামনগর সাতগাছির ভজহরি মান্না। বাঙালি নানা পদের সম্ভার তো রয়েইছে, তার সঙ্গে বিশেষ করে নামজাদা এই দোকানের কষা মাংস।
কস্তুরি রেস্টুরেন্ট, বালিগঞ্জ: যদি বালিগঞ্জের আশেপাশে কষা মাংসের খোঁজ করে থাকেন, তাহলে বেশি চুলচেরা সন্ধান ছেড়ে চলে যেতে পারেন কস্তুরি রেস্টুরেন্টে। ছোট হলেও এই দোকানের অসাধারণ মানের মাংস মন জিতেছে অনেক খাদ্য বিশারদের।
সপ্তপদী রেস্টুরেন্ট, উল্টোডাঙা: উল্টোডাঙার বুকে গত কয়েক বছরে বিশেষ নাম কিনেছে এই দোকান। বাঙালি খাবারই এদের বিশেষত্ব, তবে মাছ ও নিরামিষের অন্যান্য পদের সঙ্গে কষা মাংসের জন্যও বেশ ভালই পরিচিতি রয়েছে সপ্তপদী-র। বেশ গুছিয়ে বাঙালি মেনু দিয়ে দুপুরের খাবার সারতে নিঃসন্দেহে চলে যেতে পারেন উল্টোডাঙা এলাকার এই রেস্টুরেন্টে।
দুপুর হোক কী রাতের খাবার, পুজোর সময় কখনও লুচি বা ফুরফুরে সাদা ভাতের সঙ্গে একবাটি সুন্দর করে রাঁধা কষা মাংস চাইলে পৌঁছে যেতেই পারেন এই দোকানগুলোতে। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।