কালীপুজো একেবারে দোরগোড়ায়। হালকা ঠান্ডাও পড়তে শুরু করেছে। এই সময়ে ছোট্ট একটা অলৌকিক গল্প হয়ে যাক বরং! তবে এটা কিন্তু কোনও ভয়ের গল্প নয়। এমনই একটা অদ্ভুত বিশ্বাস, যাতে আচ্ছন্ন দুটো মহাদেশের বহু মানুষ।
শীত এসে যাওয়া মানেই নতুন বছরের সূচনালগ্নও এসে পড়া। ৩১ ডিসেম্বরের রাতটা আপনি কী ভাবে উপভোগ করেন? বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করে? কিংবা ভালমন্দ খেয়ে? রাত ১২টা বাজলেই বাজিপটকা ফাটিয়ে? পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই এই ধরনের কোনও না কোনও পদ্ধতিতে উদযাপন করেন সময়টা।
কেউ হয়তো শ্যাম্পেনে চুমুক দেন, কেউ ঠোঁট ডোবান ভালবাসার মানুষের ঠোঁটে। কিন্তু এমনও কেউ কেউ আছেন, যাঁরা এই সময়ে মুখে পুরে ফেলেন ১২টা আঙুর। আর সেগুলোই বলে দেয়, বছরটা কেমন কাটবে।
এই অদ্ভুত অভ্যাস স্পেনের এবং লাতিন আমেরিকার কিছু মানুষের। ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টায় তাঁরা মুখে পুরে নেন ১২টা বিশেষ ধরনের আঙুর।
নিয়ম হল, রাত ১২টার প্রতিটা ঘণ্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে একটা করে আঙুর মুখে ভরে চিবিয়ে খেয়ে নিতে হবে। ১২টা ঘণ্টা যত ক্ষণে শেষ হবে, তত ক্ষণের মধ্যে শেষ করতে হবে ১২টা আঙুর।
যদি কেউ ১২টাই শেষ করতে পারেন, তাহলে তাঁর আগামী ১২টা মাসই ভাল কাটবে। আর যদি তা না পারেন, তা হলে যে ক’টা শেষ করতে পারবেন— ভাল কাটবে সেই ক’টি মাসই।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই অদ্ভুত বিশ্বাস রয়েছে স্পেনের কিছু মানুষের মনে। আর পরবর্তীতে স্পেনের মানুষের হাত ধরেই এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে লাতিন আমেরিকার নানা জায়গায়। এখন সেখানেও ৩১ ডিসেম্বর মুখে ১২টা আঙুর পোরার খেলায় মাতেন বহু মানুষ।
তবে যে কোনও আঙুর নয়। স্পেনে এই খেলাটা খেলার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হল আলেদো আঙুর। স্পেনের আলিকানতে এলাকায় এই আঙুরের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়।
সেখানে ১২টা আলেদো আঙুর বরফে জমিয়ে প্যাকেটে করে গোটা ডিসেম্বর মাস জুড়ে বিক্রি করেন। ৩১ ডিসেম্বরের রাতে জমিয়ে খাওয়া হয় এই আঙুর।
ভূত চতুর্দশীর আগেই যখন এই গল্পটা জেনে গেলেন, তা হলে আর কী! দু’মাস পরের জন্য এখন থেকেই একটা পরিকল্পনা করতে শুরু করে দেবেন নাকি? দেখে নিন, কার কার সঙ্গে আঙুর নিয়ে নতুন বছরের শুরুটা উদ্যাপন করবেন। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।আপনি!