প্রতীকী চিত্র
পুজোয় যদি দেখেন মণ্ডপের থিমের চেয়েও বেশি নজর কাড়ছে আপনার শাড়ি, কেমন হবে তা হলে? বেশ কয়েক বছর ধরেই পুজোর ফ্যাশনে ‘ইন’ বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প পটচিত্র। ‘পট’ কথার অর্থই হল ‘কাপড়’। মোটা কাপড় বা কাগজে আঁকা পৌরাণিক কাহিনির মুহূর্ত– পটচিত্রে মূলত গাছগাছালি থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করাই পুরনো রীতি। পটশিল্পীরা সেই ছবি দেখিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে গল্প বলে নিজেদের জীবিকানির্বাহ করতেন।
কিন্তু হালের শাড়ি বা অন্যান্য পোশাকে পটের ছবির ব্যবহার তাঁদের রোজগারের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন পটচিত্র গ্রাম পিংলার শিল্পীরা। মোটামুটি ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০-৪০,০০০ টাকা দামেও পটচিত্র শাড়ি রয়েছে। কাপড়ের মান এবং রঙের ব্যবহারের উপরে নির্ভর করে এই শাড়ির দাম। কেরালা কটন, তসর, সিল্ক-সহ নানা ধরনের কাপড়ের উপরেই পটের কাজ করা শাড়ি তৈরি হয়ে থাকে।
পিংলার বিশিষ্ট পটশিল্পী বাহাদুর চিত্রকর আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “শুধু শাড়িই নয়, পাঞ্জাবী, কুর্তি– সব কিছুর উপরেই পটচিত্রের কাজের চাহিদা আছে। দেশে-বিদেশে সর্বত্রই এর বাজার খুবই ভাল। সিল্ক হলে রং একটু ছড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। সুতি বা তসরে সেই সমস্যাটা হয় না। দামের উপরে কাজ নির্ভর করে। যেমন ৫০০ টাকার শাড়ি হলে সেই কাজটা এক দিনেই করা যায়। আবার ধরুন ১০,০০০ টাকার শাড়িতে কাজের যা পরিমাণ, তা করতে ৮-১০ দিন লেগে যায়।”
ই-কমার্স সাইট, নামকরা বিভিন্ন শাড়ির ব্র্যান্ড থেকে একেবারে স্থানীয় দোকান– প্রায় সব জায়গাতেই সহজে পাওয়া যায় এই ধরনের শাড়ি। বাজারচলতি নকশার বাইরে একেবারে অন্য রকম কিছু চাইলে সিল্ক বা সুতির থান কিনে নিজের পছন্দমতো পটের ছবি এঁকে নিতে পারেন। অথবা অর্ডার দিয়ে কাস্টমাইজ়ড ছবিতেও বানিয়ে নিতে পারেন আপনার মনের মতো শাড়ি।
এই শাড়ি নিজেই এতটা নজরকাড়া যে, এর সঙ্গে খুব ভারী রূপটান বা গয়নার প্রয়োজন হয় না। খুব হালকা, ছিমছাম সাজের সঙ্গে পটচিত্রের রং আর গল্পে নিজেকে করে তুলুন অনন্যা। আপনার ইচ্ছেমতো পৌরাণিক গাথা, ঐতিহাসিক গল্প, জনসচেতনতার বার্তা বা আপনার প্রতিবাদের ভাষা– সব কিছুই ফুটে উঠতে পারে আপনার পুজোর শাড়িতে। যা আপনার সাজকে করে তুলবে বাকি সকলের চেয়ে আলাদা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।