শ্যামা পূজা, দীপান্বিতা কালীপুজো, আদ্যাশক্তি- অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দীপাবলি প্রায় দোরগোড়ায়। কার্তিক মাসে কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে আরাধনা করা হয় শক্তির দেবীর।
আঠারো শতকে প্রকাশিত ‘কালী সপর্যাসবিধি’–তে প্রথম দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীপুজোর বিধান পাওয়া যায়। বাংলায় দীপাবলি বা দীপান্বিতা, আর বাংলার বাইরে এই উৎসব দিওয়ালি নামে পরিচিত।
দেবীর নাম কালী কেন, তার পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ। কাল-এর স্ত্রীলিঙ্গ কালী। আবার মহাদেবের আর এক নাম কাল।
কাল অর্থাৎ অনন্ত সময়। জগতের উৎপত্তি, স্থিতি, মহাপ্রলয়ের পিছনে রয়েছে কালশক্তি।
শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, কাল সর্বজীবকে গ্রাস করে। সেই কাল–কে যিনি গ্রাস করেন, তাঁকে কালী বলা হয়।
কালী কেন শক্তির দেবী, তার ব্যাখ্যা রয়েছে শাস্ত্রে। কাল শব্দের একাধিক অর্থ। কাল মানে সময়, অন্য দিকে কালের আর এক অর্থ কৃষ্ণবর্ণ।
সংহার বা মৃত্যুর ভাবনাও লুকিয়ে রয়েছে কাল–এর অর্থে। অতএব কালী যেমন সময়ের জন্মদাত্রী, পালনকর্ত্রী, তেমনই তিনি প্রলয়কারিণী নিয়ন্ত্রক।
দেবীর নামে কাল শব্দের সঙ্গে যুক্ত ঈ-কার। সনাতন ধর্মে ইশ্বরী বা সগুন ও নির্গুণ ব্রহ্মকে উপলব্ধি করার জন্য ঈ-কারের সৃষ্টি ও শব্দোচ্চারণকে উল্লেখ করা হয়েছে।
শ্রী শ্রী চণ্ডীতে উল্লেখ রয়েছে- ‘ইয়া দেবী সর্বভতেষু চেতনেত্যাবিধীয়তে, নমস্তসৈ, নমস্তসৈ নমো নমোঃহ।’ সেই কারণে কালী–কে অভিহিত করা হয় ক্রোধাম্বিতা, রণরঙ্গিণী এবং করালবদনা নামে।
এই সবের কারণে যে মহাকাল পরিস্থিতির উদ্ভূত হয়, তা-ই আবার সকল সৃষ্টিকে গ্রাস করে। মহাকালেরও যে পরিণাম আছে, তার উল্লেখ পাওয়া যায় সনাতন ধর্মে। মহাকালীর ভিতরেই মহাপ্রলয়ের কালশক্তি বিলীন হয়ে যায়।