দশমহাবিদ্যার ইনি প্রথমা মহাবিদ্যা। শাক্ত মতে, আদ্যাশক্তি মা কালী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ। বলা হয়, ‘কাল শিবহ্। তস্য পত্নতি কালী।’ শিবের আরেক নাম কাল এবং তাঁর স্ত্রী কালী।
মা কালীর উৎপত্তি নিয়ে একাধিক কাহিনি রয়েছে সনাতন শাস্ত্রে। দেবী কালীর একাধিক রূপভেদের উল্লেখ রয়েছে তন্ত্র পুরাণে।
কালিকা পুরাণের পাতা থেকে জানা যায়, পুরাকালে সারা পৃথিবী জুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক দুই দৈত্য। এই দুই দৈত্যের কাছে এমনকি দেবতারাও যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করেন।
দেবলোক থেকে বিতাড়িত হন দেবরাজ ইন্দ্র। দেবলোক পুনরায় ফিরে পাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি আদ্যাশক্তি মা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন।
দেবী সন্তুষ্ট হয়ে আবির্ভূত হন। তাঁর শরীরের কোষ থেকে সৃষ্টি হয় অন্য এক দেবীর, দেবী কৌশিকী। মহামায়ার দেহ থেকে নিঃসৃত দেবী কৌশিকী কৃষ্ণ বর্ণ ধারণ করেন, যা দেবী কালীর আদিরূপ।
দেবতাদের স্বর্গরাজ্য দখলের উদ্দেশ্যে অসুরেরা যখন তাণ্ডব চালাচ্ছে, ঠিক তখনই সৃষ্টি হয় দেবী দুর্গার।
অসুরদের প্রধান, রক্তবীজ ছিল ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত। তার এক ফোঁটা রক্ত মাটিতে পড়লেই তা থেকে জন্ম নিচ্ছিল একাধিক অসুর।
আর সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেই মা দুর্গা তাঁর ভ্রু যুগলের মধ্য থেকে জন্ম দেন মা কালীর।
ভয়াবহ রুদ্রমূর্তি মা কালীর। এক এক করে সব অসুর বধ হতে থাকে দেবীর হাতে। অসুরের শরীর থেকে এক ফোঁটা রক্ত ক্ষরণ হলেও তা জিভ দিয়ে লেহন করতে থাকেন দেবী।
সব শেষে রক্তবীজকে বধ করে সমস্ত রক্ত পান করে নেন মা কালী, যাতে এক ফোঁটা রক্তও নীচে পড়তে না পারে। এ ভাবেই তিনি ধ্বংস করেন অসুরদের।