কালী শব্দটির অর্থ কালো বা কৃষ্ণ বা ঘোর বর্ণ। ‘কাল’ শব্দের অর্থ সাধারণত দু’টি— মৃত্যু বা নির্ধারিত সময়। কালী আসলে কাল শব্দের স্ত্রী লিঙ্গ। সহজ করে ভাবলে, কাল (সময়)-কে কলন (রচনা) করেন যিনি, তিনিই কালী।
দারুক নামের এক অসুরকে বধের কথা উল্লেখ রয়েছে লিঙ্গপুরাণে। এই অসুরও তপস্যার ফলে বরলাভ করেছিল সে শুধুমাত্র নারীর হাতেই বধ্য।
দেবতারা পরাজিত হন দারুকের কাছে। স্ত্রী রূপ ধরেও লাভ হয়নি বিশেষ। তখন তাঁরা শরণাপন্ন হন মহাদেবের।
মহাদেব তাঁর বামে উপবিষ্টা পার্বতীকে বললেন, সেই অসুরকে বধ করার জন্য তিনি আহ্বান জানাচ্ছেন পার্বতীকে।
তখনই সূক্ষ্ম রূপ ধরে ভগবান শিবের ভিতরে প্রবেশ করেন পার্বতী। দেবতারা তো বটেই, এমনকি প্রজাপতি ব্রহ্মাও বুঝতে পারেননি সে কথা।
দেবী মহাদেবের কণ্ঠের বিষের প্রভাবে কালকণ্ঠী হয়ে শিবের তৃতীয় নয়ন থেকে প্রকট হলেন।
মা কালীর ক্রুদ্ধ রূপ সেটিই। দেবীর পরনে বাঘছাল, কণ্ঠে জড়ানো সাপ, হাতে ত্রিশূল, মস্তকে অর্ধচন্দ্র।
দেবী প্রলয় নাচন শুরু করে যুদ্ধে আহ্বান জানালেন। দেবীর কোপে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হল দারুকাসুরের সেনাবাহিনী।
দারুকাসুরের জীবনও সমাপ্ত হল দেবীরই হাতে। কালীর নৃত্যে ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে প্রলয় শুরু হল। দেবীর হুঙ্কারে চতুর্দিক কম্পিত হল।
মহাদেবের কণ্ঠের কালকূট বিষের প্রভাবে কালকণ্ঠী দেবী কালস্বরূপিণী হয়ে অশুভের বিনাশ করতে লাগলেন। তখন দেবতারা ফের মহাদেবের শরণাপন্ন হন।
মহাদেব এর পর শিশুর বেশে দেবীর সামনে এসে কাঁদতে শুরু করেন। এতে দেবীর মনে বাৎসল্যের সূত্রপাত হয়। শিশুটিকে কোলে তুলে নিলেন তিনি।
স্তন্যপান করালেন শিশুটিকে। স্তন্যপানের অছিলায় কালকূট বিষ গ্রহণ করলেন মহাদেব। ধীরে ধীরে কালীর ক্রোধ প্রশমন হল।