মহিষাসুর নয়, দেবতাদের দম্ভ বিনাশেই আবির্ভূত হয়েছিলেন জগদ্ধাত্রী। এই পুজোর ইতিহাসের পাতায় রয়েছে পুরুষতন্ত্রের ছোঁয়া।
পুরাণ মতে, দেবী জগদ্ধাত্রীকে প্রকট হতে হয়েছিল দাম্ভিক দেবতাদের দর্পচূর্ণ করতে। মহিষাসুর বধের পর দেবতাদের উল্লাসই জন্ম দেয় জগদ্ধাত্রীর। দেবতাদের ধারণা হয়েছিল, যেহেতু দেবী দুর্গা তাঁদের সম্মিলিত শক্তির প্রকাশ, তাই মহিষাসুরকে বধ করেছেন তাঁরাই, কোনও নারী শক্তি নয়। দেবী দুর্গার রূপদান শুধু মাত্র ব্রহ্মার বরের সম্মানরক্ষা করতেই।
দেবতাদের এই দম্ভের কথা পৌঁছয় ব্রহ্মার কাছে। যক্ষ বেশে ব্রহ্মা দেবতাদের কাছে যান। তাঁর নির্দেশে পরমেশ্বরী দেবী আবার উত্তীর্ণ হন দেবতাদের শক্তি পরীক্ষায়।
একটি ছোট তৃণখণ্ড তিনি নিক্ষেপ করেন দেবতাদের সামনে। ওই তৃণখণ্ডকে ধ্বংস করে প্রমাণ করতে হবে দেব শক্তিই শ্রেষ্ঠ। এটাই ছিল পরীক্ষা।
পুরাণ অনুযায়ী, এর পরে একে একে সব দেবতা সেই পরীক্ষায় অবতীর্ণ হলেন। ইতিমধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম্ভিকতার পরিচয় দেওয়া দেবরাজ ইন্দ্র এলেন প্রথমে।
কিন্তু বজ্র নিক্ষেপ করেও ধ্বংস করতে পারলেন না সামান্য তৃণখণ্ডকে। অগ্নি পোড়াতে পারলেন না, বায়ু এতটুকুও উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না। বরুণ প্রবল জলস্রোত এনেও ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না ওই তৃণখণ্ড।
এমন সময়ে দেবতাদের সামনে আবির্ভূত হলেন সালঙ্কারা পরমাসুন্দরী চতুর্ভুজা এক মূর্তি। তিনি অনায়াসেই ধ্বংস করলেন ওই তৃণখণ্ড। দর্পচূর্ণ হল দাম্ভিক দেবতাদের।
এই সালঙ্কারা চতুর্ভুজা দেবীই জগদ্ধাত্রী। দাম্ভিক দেবতাদের তিনি নতুন করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নারীই এই জগতের ধারিণী শক্তি।