বরণ হোক বা সিঁদুর খেলা, আগমনী হোক বা বিসর্জন— মঙ্গলকামনায় অধিকার তো সকলের। নারী, পুরুষ বা তৃতীয় লিঙ্গ। সে বার্তারই সুর কলকাতার একাধিক পুজো মণ্ডপে।
লিঙ্গের সীমারেখা পেরিয়ে তাই দেবী বরণ এবং সিঁদুর খেলায় রামধনুর রং। তাতেই রঙিন হল বিজয়া দশমী। বিক্ষিপ্ত ভাবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সিঁদুর খেলায় মাতলেন রূপান্তরকামীরা। তৃতীয় লিঙ্গের অধ্যাপিকা মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁদুরে রাঙা হয়েছেন। কিন্তু কলকাতায় নেই তিনি। ভেলোরে চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন।
রূপান্তরকামীদের অধিকারের জন্য লড়াই করেন অনুরাগ মৈত্রী। নিজেও রূপান্তরকামী। বাড়ির কাছেই দক্ষিণ সিঁথি মিলন মেলা দুর্গোৎসবে ঠাকুর বরণ করেছেন অনুরাগ ও তাঁর সমকামী বন্ধু দেব।
অনুরাগ বললেন, ‘‘ঠাকুর বরণ করতে একটু বাধো বাধো ঠেকত আগে। যদি কেউ কিছু বলে আমাদের! কিন্তু এ বার দেখলাম, মা মাসিরা নিজেরাই আমাদের ডেকে দেবী-বরণে নিয়ে গেলেন। আমি এবং আমার সমকামী বন্ধু দু’জনেই আপ্লুত।’’
অনুরাগ বা দেব, কেউই এ বছর পুজোয় আলাদা করে প্রান্তিক যৌনতার মানুষদের সঙ্গে সিঁদুর খেলায় যোগ দেননি। কোনও গোষ্ঠীতেও আবদ্ধ থাকেননি তাঁরা। আনন্দে মেতেছেন সকলের সঙ্গেই।
রূপান্তরকামী রঞ্জিতা সিংহের উদ্যোগে একটি পুজো হয় কলকাতার কালিকাপুরে। আয়োজকরা তার নাম দিয়েছেন গরিমা গৃহে রূপান্তরকামীদের পুজো। গত ৪ বছর ধরে সেখানে উদ্যাপনে মাতেন রূপান্তরকামীরা।।
এই পুজোয় মা দুর্গা অর্ধনারীশ্বর রূপে পূজিতা। রূপান্তরকামী মানুষ ছাড়াও সমাজের সর্ব স্তরের, সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণ করেন। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এই পুজোর জন্য আর্থিক সাহায্যও করেছে।
গরিমা গৃহের আবাসিকদের সঙ্গে এ বছর কুমারী পুজোর আয়োজনও করেছিলেন রঞ্জিতারা।
রূপান্তরকামী ববিও এ বার দেবী বরণ করেছেন তাঁর পাড়ার পুজোয়। মেতেছেন সিঁদুর খেলায়।