সময়টা ছিল শীতকাল। মেদিনীপুরে একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে মা ছাড়াও দলে আরও পাঁচ জন ছিলেন। শো শেষ করে কলকাতায় ফিরছি। সময়টা আমার এখনও মনে আছে- প্রায় শেষ রাত। তিনটে তেরো। মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় ফেরার পথে মাঝখানে বড় একটা জঙ্গল। তার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময়ে একটা জায়গায় হঠাৎ আমাদের গাড়িটা থেমে গেল। চার দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সামনে তাকিয়ে দেখি একটা অস্পষ্ট ধোঁয়ার অবয়ব। যেন কেউ দাঁড়িয়ে আছে। ভাল করে দেখেও ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না। শুধু মনে হচ্ছিল সামনে কোনও কিছুর অবয়ব। কিছু ক্ষণের জন্য আমাদের হৃৎস্পন্দন যেন থেমে গিয়েছিল! আমাদের গাড়ি চালাচ্ছিলেন যিনি, তিনিও ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না কী করবেন। অদ্ভুত ভাবে ওই ছায়া মূর্তিটাও চুপ করে দাঁড়িয়েছিল। হঠাৎ আমাদের ড্রাইভার খুব জোরে গাড়ি চালিয়ে দিলেন। আমি তো ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম! দেখি গাড়িটা যেন ওই ছায়ামূর্তিকে ভেদ করে বেরিয়ে গেল! পিছন ফিরে দেখি, একই জায়গায় ছায়া মূর্তিটা দাঁড়িয়ে। ওই ঘটনার কথা মনে পড়লে এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। ওই রাতটা আমি কোনও দিনও ভুলতে পারব না।সে দিন তো একটা অবয়ব দেখেছিলাম। কিন্তু এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে কিছু দেখিনি। অনুভব করেছিলাম শুধু। সামনেই ভূত চতুর্দশী। তাই সবটা মনে পড়ে গেল।‘ভূত চতুর্দশী’ ছবির শ্যুটিং চলছিল তখন। বোলপুরের এক বাড়িতে শ্যুটিং করছিলাম। বাড়ির ছাদে বিকেল বেলায় একটা দৃশ্যের শ্যুট ছিল। ছাদে তখন আমরা অনেকেই। হঠাৎ করে ঘাড়ের কাছে কাঁটা দিয়ে উঠল। মনে হচ্ছিল যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে। ভেবেছিলাম, সমস্যাটা আমারই। কিন্তু পরে জানতে পেরেছিলাম, ওই সময়ে ছাদে যাঁরা ছিলেন, সকলেরই নাকি একই অনুভূতি হয়েছিল।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।