অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তী
গতে বাঁধা ঠাকুর দেখা, ক্যাপ বন্দুক ফাটানো কি বেলুন কেনা- ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি নেই অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তীর। বরং তাঁর শৈশবের শারদীয়া কেটেছে অনেকটাই অন্য রকম ভাবে। বছরভর ব্যস্ত অভিভাবকদের পুজোর ক’টাদিনই ফুরসত মিলত। ভ্রমণপিপাসু মন তখন আনচান করে টেনে নিত ঠিক কোনও পাহাড়ে বা জঙ্গলে।
অভিনেতা দম্পতি সব্যসাচী চক্রবর্তী ও মিঠু চক্রবর্তীর পুত্রের ছোটবেলার পুজো অনেকটাই কেটেছে শহরের বাইরে। এমনও হয়েছে যে, তাঁরা কলকাতায় ফিরেছেন একেবারে বিজয়া দশমীর দিনে। ফলে বেশির ভাগের ছোটবেলার পুজোর স্মৃতির সঙ্গে তাঁর মিল নেই বললেই চলে।
তবে কৈশোরের পুজোর দিনগুলো তাঁর কাছে এখনও ভীষণ প্রিয়। সদ্য স্কুলের গণ্ডি পেরবো পেরবো করা কিশোর গৌরব ধীরে ধীরে কলকাতায় পুজো কাটাতেও উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে উৎসবে, হুল্লোড়ে মেতে ওঠার হাতেখড়ি তখনই। হাই স্কুলের শেষ বছর কি কলেজে ওঠার সময়ের কথা। বন্ধুদের সঙ্গে গাড়ি ভাড়া করে রাতভর মহম্মদ আলি পার্ক থেকে ম্যাডক্স স্কোয়ার চষে ফেলা! সেই হইচইয়ের দিনগুলো ফিরে দেখতেই আনন্দে চকচক করে উঠল চোখ! পাড়ার সবাই মিলে নাটক করা, নাচতে নাচতে ঠাকুর আনতে যাওয়া, বন্ধুরা মিলে সারা দিন ধরে ঠাকুর দেখা- দিনগুলো ভিড় করে এল নিমেষে!
সে সব দিন ফেলে এসেছেন অতীতে। গৌরবের পুজো এখন অনেকটাই অন্য রকম। পেশার সুবাদে সেরা পুজো, প্রতিমা-প্যান্ডেলের বিচার করতে কিংবা উদ্বোধনের জন্য হরেক মণ্ডপে ঘোরা এমনিই থাকে রুটিনে। আগের মতো হইচই করে ঠাকুর দেখা বা হুল্লোড় হয়ে ওঠে না আর। পুজোর ক’দিন সারা বছরের শ্যুটিং থেকে ছুটি। পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা-গল্পেই সময় কেটে যায়।
ছোটবেলার পুজো নাকি এই বড়বেলার, কোনটা বেশি প্রিয় গৌরবের? “আমি জীবনে তিন ধরনের পুজো কাটিয়েছি। এ দিক- সে দিক পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার পুজো, কৈশোরে হইহুল্লোড় করা বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো উন্মাদনার পুজো আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরিবিলিতে কাটানো চার দিনের ফুরসতের পুজো। তবে সবথেকে প্রিয় এই মাঝের সময়টা,” অকপটে বললেন অভিনেতা।
কৈশোরের সেই বিশেষ দিনগুলোয় কি বিশেষ কেউও ছিল? গৌরবের কথায়, “এক সময়ে ম্যাডক্স স্কোয়ারে বসে অপেক্ষা করতাম, যদি কোনও মেয়ে আমার সঙ্গে এসে কথা বলে! কিন্তু তেমনটা হত না কখনওই।” তবে পরবর্তীতে ১১-১২ ক্লাসে পড়ার সময়ের প্রেম ও বান্ধবী যেন তাঁর পুজোর আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলেছিল। সে কথাও জানাতে ভোলেননি অভিনেতা।
আর যদি তিনটি বর পাওয়ার সুযোগ আসে এই পুজোয়? কী চাইবেন? নিমেষে পাল্টা জবাব, গুপী বাঘার পাওয়া তিনটি বরই হুবহু চেয়ে নেবেন তিনি। যেখানে ইচ্ছে যাওয়া, যা ইচ্ছে খাওয়া আর গান বাজনা করে সারাটাজীবন কাটানোর সুযোগ! এর চেয়ে ভাল বর আর হয় না বলেই দৃঢ় বিশ্বাস তাঁর।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।