মা কালীকে ঘিরে সাধক রামপ্রসাদ বা শ্রীরামকৃষ্ণের নাম যতটা উচ্চারিত হয়, ঠিক ততটাই মনে গাঁথা থাকে রানি রাসমণির আখ্যান। ছোটপর্দায় একটি দীর্ঘ সময় ধরে এই ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করে মানুষের মন জয় করেছেন অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়। দর্শকমনে স্থায়ী হয়ে রয়েছে ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ চরিত্রটি। দেবীর সঙ্গে রাণীমার অমোঘ টান কেবল পর্দাতেই নয়, পর্দার বাইরেও। এই টান অভিনেত্রী আরও বেশি করে উপভোগ করেছিলেন দক্ষিণেশ্বরে মায়ের গর্ভগৃহে প্রবেশের পর। মায়ের পুজোর দিনে ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’র শুটিংয়ের সময়ে গর্ভগৃহ ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা ফিরে দেখলেন দিতিপ্রিয়া।
আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “যখন রাসমণি করতাম, প্রতি বছরই কালীপুজোর রাতেরবেলা দক্ষিণেশ্বরে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। একবার আমাদের টিমের কয়েকজন সদস্য মিলে মায়ের দর্শনে গিয়েছিলাম। এমনকি গর্ভগৃহেও ঢোকার সৌভাগ্য হয়েছিল আমাদের। তাও ঠিক সেই সময়ে যখন মায়ের আসল পুজোটা হয়।”
কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? অভিনেত্রীর কণ্ঠে তখন আবেগের সমুদ্র। দিতিপ্রিয়া বলেন, “আমি শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যাও করতে পারব না সে দিন গর্ভগৃহে ঢোকার পর কী অনুভূতি হচ্ছিল আমার। মায়ের সাজসজ্জা থেকে শুরু করে গর্ভগৃহের ওই পরিবেশের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। গর্ভগৃহে খুব কম মানুষের ঢোকার সৌভাগ্য হয়। ধারাবাহিকে অভিনয় করার সূত্রে সেই সুযোগটা আমি পেয়েছিলাম। সে এক আলাদাই অভিজ্ঞতা। আমার আজও মনে পড়ে শেষবার যখন গিয়েছিলাম, মায়ের পরনে ছিল লাল পাড় দেওয়া কালো বেনারসি। মাথা থেকে পা যেন মুড়ে দেওয়া হয়েছে অলঙ্কারে।”
জানেন কি, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ ধারাবাহিকটির জনপ্রিয়তার পিছনেও রয়েছে মায়ের যোগ! কী ভাবে? দিতিপ্রিয়া বলেন, “গর্ভগৃহে ঢোকার আমার চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল। আমি আমার টিমের কাছে প্রস্তাব রেখেছিলাম, এই গর্ভগৃহ পুরোটা না হলেও এর ৫০ শতাংশও যদি আমরা তৈরি করতে পারি আমাদের শুটিংয়ের সেটে, তা হলে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছতে পারব। আমরা সফলও হয়েছিলাম। ধারাবাহিকে দক্ষিণেশ্বরের প্রতিষ্ঠাদিবসের দিনে একই ভাবে গর্ভগৃহের মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল সেটে। আজ ভাবি, কেন এতটা জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছে এই ধারাবাহিকটি। সবই মায়ের আশীর্বাদ।”
তবে কেবল দক্ষিণেশ্বরের কালী ঠাকুরই নয়, মা শ্মশানকালীর রূপ দেখেও আপ্লুত হয়েছিলেন দিতিপ্রিয়া। তিনি বলেন, “এখন যদিও খুব একটা যাওয়া হয়ে ওঠে না, তবে আগে শুটিংয়ের সময়ে প্রতি বারই কালীপুজোর দিনে শ্মশানকালী দেখতে যেতাম, পরিবারকে সঙ্গে নিয়েই। তবে অন্যান্য কালীক্ষেত্রের তুলনায় আমি মনে করি দক্ষিণেশ্বর এমন একটা জায়গা যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গিয়ে বসে থাকা যায়। মনটা একদম শান্ত হয়ে যায়।”
প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ