দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায়, হলিউডের সবচেয়ে নিকটবর্তী, ভ্যালি বেঙ্গলি কমিউনিটির (ভিবিসি) দূর্গাপুজো 'পাড়ার পুজো' হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। দুর্গামণ্ডপে নিষ্ঠা সহকারে পুজো, ঘরোয়া পরিবেশ, সর্বোপরি সকলের আন্তরিক ব্যবহার এই পুজোর বিশেষত্ব।
কলকাতা পুজোর নির্ঘণ্ট মেনে ঘট স্নান, কলাবৌ স্নান দিয়ে 'পাড়ার পুজো'র মণ্ডপ এই বছর আবার কল্লোলিত হয়ে উঠেছিল। ষষ্ঠীর সন্ধে থেকেই ঢাক, কাঁসর, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত ছিল সুবৃহৎ পূজাপ্রাঙ্গণ। পূজামণ্ডপ জমজমাট ছিল অঞ্জলি দেওয়ার উপচে পড়া ভিড়, সন্ধিপুজো ও সন্ধ্যারতিতে।
প্রবাসে ষোলোআনা বাঙালিয়ানাকে ধরে রাখতে এখানকার সমস্ত বাঙালির প্রচেষ্টা নজর কেড়ে নেয়। এই বছরের উপরি প্রাপ্তি ছিল 'পেট পুজো' উৎসব । ভূরিভোজনের পাশাপাশি ছিল কলকাতা স্ট্রিট ফুডের হরেক-রকম ষ্টল। বাঙালির জিভে-জল আনা ফুচকা থেকে শুরু করে, ভেজিটেবল চপ, মাছের চপ, মাংসের চপের এবং রকমারি মিষ্টির পসরা। পাটিসাপ্টা, চন্দ্রপুলি থেকে শুরু করে কচিকাঁচাদের জন্য ছিল কুকিজ ও আমের লস্যির চমৎকার আয়োজন । সমস্ত স্ট্রিট ফুড-স্টলের সামনেই চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল। তবে, উপচে পড়া ভিড় হয় বাঙালির নস্টালজিয়া আর আবেগ মাখা ফুচকার স্টলের সামনে । এমনকি, ভূরিভোজনের পরে একটি মিষ্টি-পান মুখে দিয়ে বাঙালির রসনাকে পরম পরিতৃপ্তির আনন্দও দিতে পেরেছেন কর্তৃপক্ষরা।
প্রতি বারের মতোই এবারেও এখানে সাংস্কৃতিক মঞ্চ আলোকিত করেছিল সুদূর কলকাতা শহর থেকে আসা অনেক প্রখ্যাত শিল্পীদের অনুষ্ঠান। ষষ্ঠী, সপ্তমী ও অষ্টমীর সুরেলা সন্ধেগুলিতে মন ভরে গেল রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে শুরু করে আধুনিক বাংলা ও হিন্দি গানে।
শেষ মুহর্তে, দেবীবরণের সময় প্রায় ৫০ জন সুসজ্জিত পুরুষ, মহিলা ও কচিকাঁচাদের ' ফ্ল্যাশ মব'য়ের চমক উৎসবের-আঙিনায় এক অনন্য-সাধারণ মাত্রা যোগ করে! অবিলম্বে উপস্থিত সমস্ত দর্শকমন্ডলী এই বিসর্জন নাচে যোগদান করে, ভিবিসি'র পুজোকে প্রকৃত অর্থে 'সবার পুজো' তে রূপান্তরিত করে তোলে । এই প্রবাসে ধুনুচি নাচ, সিঁদুর খেলা, মিষ্টি মুখ, কোলাকুলি, আর বন্ধুত্বের মেলবন্ধনে মধুর সমাপ্তি হয় ২০২৩ দুর্গোৎসবের আর প্রতীক্ষার শুরু ২০২৪ উৎসবের।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।