Durga Puja Outside Kolkata

১০ ইউরো চাঁদা দিয়ে শুরু হয় প্রথম সর্বজনীন

১৯৬৩-র শরতে রাসেল স্কোয়ারের মেরি ওয়ার্ড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় লন্ডন তথা ভারতবর্ষের বাইরের প্রথম দুর্গাপুজো।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:৪৪
Share:

হান্সলো-র দুর্গাপ্রতিমা। ছবি: প্রতিবেদক।

বেজে উঠেছে পুজোর বাদ্যি। লন্ডনের পুজোগুলোতে তাই সাজো সাজো রব। প্রায় ৪০টা পুজো হয় লন্ডন জুড়ে। এর মধ্যে হ্যাম্পস্টেড, ক্যামডেন, ওয়েম্বলি এবং উত্তর লন্ডনের পুজোগুলো বিশেষ বিখ্যাত।

Advertisement

লন্ডনে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু হয় ১৯৬৩ সালে। ‘বেঙ্গলি ইনস্টিটিউট’-এ নিয়মিত আড্ডা এবং খাওয়াদাওয়া করতে আসত এক দল বাঙালি পড়ুয়া। এ রকমই এক আড্ডায় দুর্গাপুজো করার প্রস্তাব দেন এক ছাত্র। যেমন ভাবা তেমন কাজ। প্রাথমিক ভাবে দলের সদস্যরাই ১০ ইউরো করে জমাতে শুরু করেন। সেই সময়ে এই অর্থ নেহাত কম নয়। বাকি টাকা তোলা হয়েছিল বিভিন্ন ভারতীয় সংগঠনের কাছ থেকে।

সে বছর প্রতিমাটি কলকাতা থেকে উপহার পাঠিয়েছিলেন অমৃতবাজার পত্রিকার সম্পাদক তুষারকান্তি ঘোষ। জাহাজে করে প্রতিমাটি প্রথমে স্কটল্যান্ডের অ্যাবাডিন বন্দরে পৌঁছয়। এরপর তা সড়ক পথে স্কটল্যান্ড থেকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। সে বছরই ‘অম্বালা’ নামে এক ভারতীয় মিষ্টির দোকান খুলেছিল লন্ডনে। পুজোর যাবতীয় ফল এবং মিষ্টি এসেছিল সেখান থেকেই। উদ্যোক্তাদের মধ্যেই এক ছাত্র একটি ছাপাখানায় কাজ করতেন। তিনিই প্রচারের জন্য লিফলেট ছাপিয়ে এনেছিলেন। পিকাডেলি সার্কাস এবং অক্সফোর্ড স্ট্রিটে তা বিলি করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: কল্লোলিত উদযাপন​

১৯৬৩-র শরতে রাসেল স্কোয়ারের মেরি ওয়ার্ড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় লন্ডন তথা ভারতবর্ষের বাইরের প্রথম দুর্গাপুজো। এডিনবরা, গ্লাসগোর মতো ব্রিটেনের বিভিন্ন অঞ্চল তো বটেই, জার্মানি-সহ ইউরোপের নানা দেশ থেকেও মানুষের ঢল নেমেছিল সেই পুজো দেখতে। এখন এখানে পুজোর দিনগুলোয় অন্তত দু’হাজার মানুষের সমাগম হয়।

লন্ডনের আর এক বিখ্যাত পুজো হল ওয়েম্বলির নির্মল মুখোপাধ্যায় পরিবারের পুজো। এ বছর তা ৪০ বছর পূর্ণ করবে। মায়ের ভোগ এবং আতিথ্যের জন্য বিশেষ পরিচিত মুখোপাধ্যায়দের পুজো। পরিবেশ, ভোগ এবং নানাবিধ খেলাধুলোর টানে বহু মানুষ আসেন হ্যারো আর্টস সেন্টারের পুজোয়। ইলিং টাউনের পুজোর বাইরে আবার নানা রকমের খাবার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। সেটাই এখানকার প্রধান আকর্ষণ। দক্ষিণ লন্ডনের টুটিংয়েও একটি পুজো হয়। পূর্ব লন্ডনের ব্রিক লেনের কাছে টনিবি হলের পুজোটি করেন বাংলাদেশিরা। ৪৪ বছর ধরে এসেক্সের উডফোর্ড গ্রিনের স্যার জেমস হকি হলের পুজোটির আয়োজন করে আসছে বাঙালি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন। লন্ডনের বাইরে বড় পুজোগুলো হয় লিভারপুল, কার্ডিফ এবং গ্লাসগোয়।

লন্ডনে তাদের প্রতিমাই সবচেয়ে বড় বলে দাবি পশ্চিম লন্ডনের হান্সলোর পুজো উদ্যোক্তাদের। ফাইবার গ্লাসের তৈরি প্রতিমাটির শিল্পী কুমোরটুলির রমেশ পাল। এখানে পুজো হবে সপ্তাহ শেষের তিন দিন, মানে ১৯ থেকে ২১ তারিখ।

আরও পড়ুন: হাউস্টন দুর্গাবাড়ির পুজো​

ব্রিটেনে সব পুজোই হয় টাউন হলে। একমাত্র রয়্যাল বার্কশায়ারের বাঙালি অ্যাসোসিয়াশনই রীতিমতো প্যান্ডেল খাটিয়ে পুজো করে! এ বার তাদের দশম বছর। পুজো হবে লন্ডন থেকে ২১ মাইল দূরে,
স্লাও-র বেইলিস হাউসে। এই পুজো ‘ডাব্‌ল ডট মুভমেন্টের’ সমর্থক। শুধু বিবাহিত মহিলারাই নন, বিজয়া দশমীর দিন মায়ের বরণে এখানে সিঁদুরখেলায় অবাধে অংশগ্রহণ করেন সব মহিলাই। এক উদ্যোক্তা বললেন, ‘‘বিবাহিত, অবিবাহিত, বিবাহবিচ্ছিন্না কিংবা স্বামীহারা, ১৮ অক্টোবর মায়ের বরণ এবং সিঁদুরখেলায় অংশগ্রহণ করতে আমরা সকলকেই স্বাগত জানাই।’’

ছবি: পুজো উদ্যোক্তাদের সৌজন্যে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement