গত বছর এ ভাবেই পালন করা হয়েছিল বিজয়া। ছবি: প্রতিবেদক।
আমরা মুষ্টিমেয় কয়েক জন, কিছুটা হুজুগের বশেই, চিনের রাজধানী বেজিংয়ে এই প্রথম দুর্গোৎসবের আয়োজন করতে চলেছি। চিনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ে অবশ্য গত দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গাপুজো হচ্ছে।
বেজিংয়ের আমরা কয়েকটি বাঙালি পরিবার এত দিন ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপে দেশের পুজোর ছবি-ভিডিয়ো দেখেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করতাম। প্রতি বছর বিজয়া সম্মিলনী করে যখন শারদীয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম, তখন মনের কোণে কোথাও একটা আশা উঁকি দিত, আমরাও কি কোনও দিন দুর্গাপুজো করতে পারব? সেই সাধ এত দিনে পূর্ণ হল।
এ বছর পুজো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় খুব হঠাৎ করেই। গত ১ সেপ্টেম্বর আমরা খান কুড়ি পরিবার একটি গেট-টুগেদার করছি। হঠাৎ সকলে মিলে ঠিক করে ফেলি, আমরাও দুর্গাপুজো করব। আর তা করব এ বছর থেকেই। হাতে আর মাত্র ৪৫ দিন বাকি। এর মধ্যে কি দুর্গাপুজোর আয়োজন করা যাবে? মনে যথেষ্ট সংশয় থাকলেও ঝুঁকিটা শেষ পর্যন্ত নিয়েই ফেললাম।
আরও পড়ুন: আপন হতে বাহির হয়ে…
আরও পড়ুন: বাহরিনের বাহারি পুজো
দুর্গাপুজোর ঠিক পরেই যে সপ্তাহান্ত, অর্থাৎ, ২০ ও ২১ অক্টোবর, এই দু’দিন আমরা পুজো করব। আমাদের কোনও পৃষ্ঠপোষক নেই। সবাই মিলে নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে সাধ্যমতো আয়োজন করার চেষ্টা করছি। এখানকার ‘বম্বে স্পাইস রেস্তরাঁ’ আমাদের দুর্গোৎসব আয়োজন করার জায়গা দিয়েছে। আমাদের মধ্যে যে ক’জন গত কয়েক সপ্তাহে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের অন্য কোনও শহরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কিছু না কিছু পুজোর সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। কলকাতা থেকে আসছেন আমাদের পুরোহিতমশাইও।
আপনাদের তো পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের হাতে রয়েছে আর কয়েকটা দিন। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। পুজোর সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, গান-বাজনা, নানা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হচ্ছে। দশপ্রহরণধারিণীকে বিদেশের মাটিতে সাদর আমন্ত্রণ জানানোর জন্য একদম তৈরি আমরা।