সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। —ফাইল ছবি।
‘‘কারও নিজেকে ভগবান বলে ঘোষণা করা ঠিক নয়’’, আজ এই মন্তব্য করলেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। কার উদ্দেশে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন তা তিনি স্পষ্ট না করলেও, সদ্য হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে পরমাত্মার পাঠানো প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজনীতিকদের মতে, সম্ভবত মোদীর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই আজ সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে ভাগবতের গলায়। সম্প্রতি কেরলের পালাক্কড়ে হওয়া আরএসএসের বৈঠকের পরে বিজেপি ও আরএসএস বিবাদের মীমাংসা হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হয়। ভাগবতের মন্তব্যের পরে কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ভোটের পর থেকে দুই শিবিরের বিবাদ যে এখনও চলছে তা ফের প্রকাশ্যে। সরকারের পতন সময়ের অপেক্ষা।
আজ পুণেতে শঙ্কর দিনকর কেনের নামে এক সঙ্ঘকর্মীর স্মৃতিতে বক্তব্য রাখতে ভাগবত বলেন, ‘‘আমরা ভগবান হব কি না তা নিয়ে মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের নিজেদের ঘোষণা করা উচিত নয় যে আমরা ঈশ্বর হয়ে গিয়েছি।’’ ভাগবত কার উদ্দেশে ওই কথা বলেছেন তা তিনি স্পষ্ট করেননি। যদিও রাজনীতিকেরা জানান, ভাগবতের মন্তব্যের নিশানা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কারণ, গত মে মাসে লোকসভার প্রচারে মোদী কার্যত ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তাঁর জন্ম জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়নি। মোদীর দাবি ছিল, তাঁকে পরমাত্মা কোনও বিশেষ কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। যত দিন সেই লক্ষ্য পূরণ না হচ্ছে পরমাত্মা তাঁকে ফিরিয়ে নেবেন না বলেও দাবি করেন মোদী।
কিন্তু আজ ভাগবতের মন্তব্য শুনে বিরোধীদের কটাক্ষ, শেষ পর্যন্ত মোদীর ভগবান হওয়ার ইচ্ছায় বাদ সাধলেন ভাগবতই। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘লোকসভার ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই বিজেপি ও আরএসএসের সম্পর্ক গোত্তা খেয়েই চলেছে। সরকারের মেয়াদ হাতে গোনা কিছু দিন।’’
আজ যে শঙ্কর দিনকর কেনের স্মরণে অনুষ্ঠানে ভাগবত ওই কথা বলেন, সেই শঙ্কর দীর্ঘ দিন মণিপুরে শিশুদের সামাজিক উন্নতিতে কাজ করে গিয়েছেন। আজ শঙ্করের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভাগবত বলেন, ‘‘মণিপুর এখনও উত্তপ্ত। সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি অশান্ত ও চ্যালেঞ্জিং। তা সত্ত্বেও আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবকেরা জমি কামড়ে সেখানে পড়ে থেকে শান্তি ফেরাতে কাজ করে চলেছেন।’’ বিরোধীদের পাশাপাশি আজ খোদ সঙ্ঘপ্রধান ভাগবতের মণিপুর নিয়ে বার্তা প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তির বলেই মনে করেছেন রাজনীতির অনেকেই।